মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের মোটরসাইকেলর জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদান ও জ্বালানি দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা। পাশাপাশি দ্বিতীয়বারের মতো বহুল আলোচিত ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩’ বাতিল অথবা সংশোধনের দাবি জানায় তারা।
সোমবার পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী দিনে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ‘পুলিশ কল্যাণ প্যারেডে’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন দাবি তুলে ধরেছেন পুলিশ সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ কর্মকর্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার সুপারিশ করার কথা জানান।
কল্যাণ প্যারেডে একজন নারী কনস্টেবল, একজন এসআই, একজন পরিদর্শক, একজন সহকারী পুলিশ সুপার এবং একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন দাবি-ধাওয়া তুলে ধরেন।
এ সময় একজন এসআই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের যানবাহন সমস্যা অত্যন্ত প্রকট। দুর্গম এলাকায় অনেক কষ্ট করে দায়িত্ব পালন করতে হয়। মাঠ পর্যায়ে কর্তব্যরত এসআইদের মোটরসাইকেল কিনতে দুই লাখ টাকা ঋণ প্রদান এবং জ্বালানি সুবিধা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এসময় স্বল্প সুদে ঋণের মাধ্যমে মোটরসাইকেল দেয়ার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্যারেডে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরমান আলী প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি করেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩ পুলিশের অধিকার চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই আইনের চরম অপব্যবহার হচ্ছে। নির্যাতনের অভিযোগ এনে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে। এ কারণে ২০১৭ সালের পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইনটি বাতিলের দাবি জানানো হয়। তবে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এই দাবি নাকচ করে দেন। তাই এবার অন্তত আইনটি সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
এর আগে সোমবার সকালে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে রাজারবাগে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের বার্ষিক প্যারেড দেখেন তিনি। এরপর কর্মক্ষেত্রে সাহসী ও মানবসেবীর ভূমিকা পালন করায় ১৮২ জন সদস্য ও নিহতদের পরিবাররের হাতে পদক বাংলাদেশ পুলিক পদক-বিপিএম, বিপিএম-সেবা, প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক-পিপিএম এবং পিপিএম-সেবা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
বক্তব্য শেষে রাজারবাগে নবনির্মিত পুলিশ অডিটোরিয়াম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাজারবাগে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টল পরিদর্শন করে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কল্যাণ সভায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।
‘জঙ্গি, মাদকের প্রতিকার বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী এই পুলিশ সপ্তাহ। চলবে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) পর্যন্ত।