এ বছর পাকিস্তান দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ।
তিনদিনের সফরে পাকিস্তান এসে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নিজ দেশের তৈরি এক্স-৭০ মডেলের একটি গাড়িও উপহার দেন আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক মাহাথির। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক কয়েকটি চুক্তির পাশাপাশি মাহাথির মোহাম্মদকে ভূষিত করা হয় পাকিস্তানের সর্বোচ্চ উপাধিতে।
তবে পাকিস্তান ছাড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে মাহাথিরের একটি বক্তব্যে কিছুটা হতাশ হতে হয় পাকিস্তানকে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মাহাথির জানান, ভারত পাকিস্তানের মধ্যে আবার কোনো উত্তেজনা দেখা দিলে মালয়েশিয়া কোনো দেশকেই সমর্থন দেবে না।
এ সময় তিনি বলেন, পাকিস্তান-ভারত উভয় দেশের সঙ্গেই মালয়েশিয়া সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে, তবে তাদের মধ্যে ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হলে কোনো দেশকেই সমর্থন দেবে না তার দেশ।
পাকিস্তান দিবসের বিশেষ প্যারেডে আমন্ত্রিত হয়ে সর্বোচ্চ উপাধিতে ভূষিত হওয়া মাহাথির মোহাম্মাদের এমন বক্তব্যে পাকিস্তান হতাশ হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
ভারতের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হওয়ার পর মিত্রের সংখ্যা বাড়াতে চেষ্টা করছে পাকিস্তান। ইতিমধ্যে চীন ও তুরস্ক সরাসরি দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই মাহাথিরের এ সফরে পাকিস্তানের চেষ্টা ছিল মালয়েশিয়ার সরাসরি সমর্থন আদায়ের।
কিন্তু আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক মাহাথির জানালেন, ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হলে তিনি কোনোপক্ষকেই সমর্থন দেবেন না।
উভয়দেশেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে একসঙ্গে কাজ করা উচিত জানিয়ে মাহাথির বলেন, সন্ত্রাসীদের যে কোনো মূল্যে নির্মূল করতে হবে। ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশের উচিত, সন্ত্রাসীদের দমন করা। কারণ সন্ত্রাসীরা নিজেদের স্বার্থে যে কোনো দেশেই হামলা চালাতে পারে।
মাহাথির বলেন, আমরা কারও পক্ষ নিতে পারি না। উপরের হাত দিয়ে সন্ত্রাসীদের অনুমোদন করা হলে তা হবে খুবই ভয়ঙ্কর। আমাদের অবশ্যই সন্ত্রাসকে থামাতে হবে। ভারত-পাকিস্তান দুই দেশকেই সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে হবে।
গত শুক্রবার মাহাথিরের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান বলেছিলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদই এখন মুসলিম বিশ্বকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ড. মাহাথির মোহাম্মদ ও রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানকে মুসলিম বিশ্ব তাদের নেতা হিসেবে বিবেচনা করে। মুসলমানদের অধিকার রক্ষায় তাদের দৃঢ় নেতৃত্ব একটি প্রতিষ্ঠিত বিষয়।
অবশ্য মাহাথিরের এমন বক্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি পাকিস্তান। তারা এটিকে শান্তির বার্তা হিসেবেই দেখছেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে বার্তা দিয়ে আটক ভারতীয় পাইলটকে তুলে দিয়েছে নিজ দেশের হাতে।