১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা দ্রুত যুগোপযোগী করে নতুন বিধিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। একই সঙ্গে ২০১২ সালের শুদ্ধাচার কৌশল সংশোধন করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সচিবালয়ে সচিব সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শুরু হওয়া সচিব সভা শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন প্রথম সচিব সভা করেন তখন আমাদের কাছে একটি নির্দেশনা এসেছিল, আমরা যেন বছরে অন্তত দুটি সচিব সভা করি। সে হিসেবে আমরা হিসাব করেছিলাম যে জুলাই মাসে আমরা একটি সচিব সভা করবো। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, প্রথম সভার যে বাস্তবায়ন অগ্রগতি সেটি জানতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দিয়েছিলাম। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজকের সভা করেছি।
সভায় গত সভার বাস্তবায়ন অগ্রগতি আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা শুদ্ধাচার বিষয়ে কিছু আলোচনা করেছি। বাজেট বাস্তবায়ন এবং নির্বাচনী ইশতেহার নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
‘এছাড়া, আমাদের কিছু দাপ্তরিক কাজে প্রধানমন্ত্রী সময়ে সময়ে যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সেগুলো যেন যত্ন সহকারে সিরিয়াসলি অনুসরণ করা হয় সে ব্যাপারে সভায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
সভায় বিশেষ কোনো নির্দেশনা বা শুদ্ধাচার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করেছি, আমাদের যে শুদ্ধাচার কৌশলটি আছে সেটি প্রায় ১২ বছর হয়েছে। এটি এখন আমরা আপডেট করার চিন্তা-ভাবনা করছি। সে প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা যুগোপযোগী করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, আলোচনা হয়েছে যে, আমাদের একটি আচরণবিধি ছিল ১৯৭৯ সালের, সেটি আপডেট করার কার্যক্রম চলছিল। তার অগ্রগতি কী, সেটি আমরা জেনেছি। আশা করছি দ্রুত সেটি চূড়ান্ত হবে।
এর আগেও এ বিধিমালাটি আপডেট করার কথা বলা হয়েছিল। এটি আসলে কবে চূড়ান্ত হবে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাকে জানানো হয়েছে এটি দ্রুতই চূড়ান্ত করা হবে। আশা করছি দ্রুতই হবে।
‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’ অনুযায়ী পাঁচ বছর পর পর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল এবং স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা বিক্রির অনুমতি নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সরকার বিধিমালাটি বাস্তবায়ন করছে না। উচ্চ আদালত এ বিধিমালাটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, সম্প্রতি কয়েকজন কর্মকর্তা বা সাবেক কর্মকর্তার দুর্নীতির তথ্য সামনে এসেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, না। স্পেসিফিক কিছু আলোচনা করিনি। এত সচিব নিয়ে তো আমরা এজাতীয় বিষয়ে আলোচনা করবো না।
সচিবরাই তো মন্ত্রণালয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করবেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, হ্যাঁ। কিন্তু আমরা একজন-দুজনের অপকর্ম নিয়ে, কোনো একটি অভিযোগ নিয়ে তো এত সচিব ডেকে এনে আলোচনা করবো না। এটি তো খুব স্বাভাবিক বিষয়।
সরকারি কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, না। এ রকম কোনো আলোচনা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত আমরা যেটি করি, বাজেট বাস্তবায়নের স্বচ্ছতার কথা বলেছি। আমরা বলেছি, অধস্তন যে অফিসগুলো আছে, যেখান থেকে মানুষকে সেবা দেওয়া হয়, সেই সেবাটা যেন ঠিকমতো দেওয়া হয়। সেই কাজটা যেন জোরালোভাবে মনিটর করা হয়। মানুষের যদি কোনো অভিযোগ থাকে সেগুলো যেন খুব সিরিয়াসলি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।