মুন্সীগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসে লাইন ভেঙে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতার মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন রহমতুল্লাহ সজল (৩৫) নামের এক যুবক। গত ১৯ মার্চ দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর বেপারী সরকারি হরগঙ্গা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তৈরি হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
ভুক্তভোগী সজলের দাবি, অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগ নেতার মারধরের শিকার হয়েছেন তিনি।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কক্ষের সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি। নিয়ম মেনে সবাই একে একে নিজ বিষয়ের সমস্যা নিয়ে প্রবেশ করছেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর বেপারী লাইন না মেনে কক্ষে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে নিয়ম মানার জন্য বলতে শুনা যায় সজলকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলমগীর বলেন, ‘সাইডে আসেন, আমারে চিনেন, মাইরা পাগল বানাইয়া ফেলব।’ পরে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন দুজন। একপর্যায়ে সজলকে মারধর শুরু করেন আলমগীর। এ সময় কয়েকজন বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সজলকে টেনেহিঁচড়ে কার্যালয়ের বাইরে নিয়ে যান আলমগীর ও তার সহযোগীরা।
ভুক্তভোগী সজল বলেন, ‘আমার বাবার আইডি কার্ডের নামে ভুল থাকায় সংশোধনীর জন্য নির্বাচন অফিসে যাই। সবাই নিয়ম মেনে লাইন ধরে কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করছিলেন। হঠাৎ ওই লোক এসে আগে ঢুকতে চাইলে আমি প্রতিবাদ করি। এরপরই আমাকে মারধর করেন তিনি। একটা সরকারি অফিসে যদি এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব?’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পরেই জিডি করতে সদর থানায় যাই। হামলাকারীর পরিচয় বলতে না পারায় তখন জিডি নেয়নি পুলিশ।’
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর বলেন, ‘আমি আগে থেকেই লাইনে ছিলাম, জরুরি ফোন আসায় এক মিনিটের জন্য বাহিরে গিয়েছিলাম। ওই ছেলে লাইনে ছিল না। তার মাথায় হেলমেট পড়া ছিল এবং হেলমেটর সামনে ক্যামেরা ছিল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সে ভাইরাল হওয়ার জন্য আমার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু রাজনীতি করি, ওই ছেলে হেলমেট পড়া থাকায় একটু শঙ্কিত ছিলাম। এ কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি ওই দিনই নির্বাচন অফিসার ডেকে মীমাংসা করে দিয়েছেন।’
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার পরেই ওই যুবক থানায় এসেছিলেন। কিন্তু নাম ঠিকানা না জানায় প্রথমে অভিযোগ নিতে পারিনি। তবে তার কাছ থেকে ভিডিও ও ছবি রেখে দিয়েছিলাম। আজ হামলাকারীর পরিচয় জানতে পেরেছি, তিনি ছাত্রলীগ নেতা। ভুক্তভোগীকে থানায় এসে অভিযোগ করতে বলেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।