সয়াবিন তেল শূন্য বরিশালের বাজারে

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে সয়াবিন তেল শূন্য হয়ে পড়েছে বরিশালের বাজার। গত দুই দিন ধরেই বরিশালের বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও। আবার কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও তা গায়ের এমআরপি লেখা মূল্যে বিক্রি করছে না কোন বিক্রেতা। তারা নতুন নির্ধারিত মূল্যে ১৯৮ টাকা দরে বিক্রি করছে। ফলে অনেকটা নিরুপায় হয়েই অতিরিক্ত মূল্যে কিনছে ক্রেতারা।তবে অধিকাংশ দোকানে তেল না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে ক্রেতাদের।

ক্রেতারা অভিযোগ করে বলছে, অতিরিক্ত লাভের আশায় তেল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে বিক্রেতারা। দুই চারটি দোকানে তেল পাওয়া গেলেও তা নতুন নির্ধারিত মূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে। অথচ তেলের বোতলের গায়ে লেখা রয়েছে পূর্বের দেয়া মূল্য। কিছু দোকানে দু চারটা তেলের বোতলের দেখা মিললেও সেগুলো পূর্বের কম মূল্যে কেনা থাকলেও বিক্রেতারা বিক্রি করছে নতুন নির্ধারিত মূল্যে।
নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরেই দেখা গেছে একই চিত্র।

এদিকে পূর্বের মূল্যে কেনা তেল নতুন নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি ঠেকাতে জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান চালালেও ঠেকানো যাচ্ছে না অসাধু ব্যবসায়ীদের।

মঙ্গলবার নগরীর সাগরদী বাজার ও রহমতপুর এলাকায় দুটি দোকানিকে বোতলের গায়ের পূর্বের মূল্য তুলে নতুন দামে বিক্রি করায় ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করে ভোক্তা অধিদপ্তর।

বুধবার (১১ মে) সকাল থেকে নগরীর রুপাতলী বাজার, সাগরদী বাজার, বাংলাবাজার ও চৌমাথা বাজার ঘুরে কোথাও মেলেনি সয়াবিন তেল। যে কয়েকটি দোকানে রয়েছে সেখানেও তেল রয়েছে সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩ বোতল। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ চাহিদা থাকলেও কোম্পানিগুলো তেল দিচ্ছে না। ফলে ক্রেতাদের চাহিদা মতো তেল দিতে পারছেন না তারা।

বাংলাবাজার জিসান স্টোরের প্রোপাইটর মোস্তফা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই কোন তেল কোম্পানির সেলসম্যান আসছে না। ফলে ক্রেতাদের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পণ্য দেওয়া যাচ্ছে না।

নগরীর চৌমাথা বাজারের আলা-আমিন স্টোরের মালিক আল-আমিন খান বলেন, তার দোকানে কিছু বোতল তেল আছে। তবে যারা অন্যান্য বাজার-সদাই নেয় তাদেরকে পূর্বের দামে দেওয়া হয়। তাছাড়া দুই-এক দিনের মধ্যেই নতুন নির্ধারিত মূল্যের তেল দোকানে ঢুকবে বলে জানান এ বিক্রেতা।

নগরীর রুপাতলী হাট সুপারশপের ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম বলেন, গত দু’দিন ধরে তাদের শপে কোন সয়াবিন তেল নেই। তবে যা ছিল তা পণ্যের গায়ে লেখা নির্ধারিত মূল্যেই বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া দুই-এক দিনের মধ্যে তেলের সরবরাহ হলেও তা নতুন নির্ধারিত মূল্যে কিনতে হবে ক্রেতাদের।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে বাজারে এসেছেন আমজাদ হোসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনেক দোকানে সয়াবিন তেল দেখেছি, কিন্তু কেউ বিক্রি করছে না। নিতে চাইলে অতিরিক্ত দামে হাঁকছেন। আমি নিরুপায় হয়ে ১৬৫ টাকা লিটারের তেল ১৯৮ টাকা করে দুই লিটার কিনেছি।

বাজার রোডের মুদি দোকানি শামসুর রহমান বলেন, দোকানে কোনো তেল নেই। কোম্পানি থেকেই সাপ্লাই নেই। আমরা বিক্রি করব কিভাবে। আমি কোনো তেল মজুদ করিনি।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. শাহ শোয়াইব মিয়া বলেন, প্রতিদিনই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযান চলাকালে বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হচ্ছে। তাছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জনস্বার্থ রক্ষায় এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার দাস বলেন, আমাদের বাজার মনিটরিং টিম প্রতিদিন বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করছে। তাছাড়া গত কয়েক দিন ধরে আন্তর্জাতিকভাবেই তেলের দাম বাড়ছে। তার ওপর যদি কোনো দোকানি বাড়তি লাভের আশায় সয়াবিন তেল মজুদ করে বা অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।