সোহেল আহমেদঃ ছিলেন ব্যবসায়ী। সাধারণ মানুষের উপকার করা সমাজ সেবক। অাধুনিক বরিশাল গড়ার কারিগড় সাবেক মেয়র মরহুম এ্যাড.শওকত হোসেন হিরণের ঘনিষ্ট বন্ধু। বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েই আগামী ৩০ জুলাই সিটি নির্বাচনে জাপার মনোনিত লাঙ্গল প্রতিকের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস এখন ভোট যুদ্ধের মহানায়ক। কিভাবে অল্পসময়ে এত জনপ্রিয়তা পেলেন তা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে যেমন চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ তেমনই আলোচনায় সংসদের প্রধান বিরোধি দল জাপার কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও।
আর্থটাইমস্ ২৪ ডটকমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজনিতীতে সক্রিয় না থাকলেও ২০০৮ সালের অনুষ্টিত সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মরহুম শওকত হোসেন হিরণের প্রচারনায় আটঘাট বেঁধে নেমেছিলেন তাপস। তখন চষে বেরিয়েছেন ৩০ টি ওয়ার্ড। হিরণের সাথে নিজেও নগরবাসীর কাছে পরিচিত হয়ে যান। হিরন আওয়ামীলীগের রাজনিতী করায় ইকবাল হোসেন তাপসকেও ওই দলের নেতা মনে করত নগরের ভোটাররা। ওই নির্বাচনে কেউ যাতে কেন্দ্রে বিশৃংখল করতে না পারে সেজন্য দারুণ ধৈর্যসহকারে কর্মিদের সাথে কাজ করে স্থানিয় নেতাদের কাছে তাপস প্রশংসিত হন। সেবার বিএনপির মৌন সসমার্থিত এস শরফুদ্দিন সান্টুর সাথে তীব্র প্রতিদন্ধিতা করে শওকত হোসেন হিরণ মেয়র নির্বাচিত হন।
কোন দলের ব্যানার ছাড়া ভালো মানুষ পেলে নগরবাসী গ্রহন করতে চায় এস শরফুদ্দিন সান্টুর পরাজয় হলেও তা বুজতে পেরেছিলেন ইকবাল হোসেন তাপস। তাই স্বপ্ন বুনেছেন। কখনও সুযোগ হলে কোনো একদিন নির্বাচনি প্লাটফর্ম তৈরি করবেন। মেয়র শওকত হোসেন হিরণের আধুনিক নগরী গড়ার যে কর্মজজ্ঞ দেখেছেন,নির্বাচনে আসতে তাপসকে উৎসাহি করে মেয়র হিরণ ভালো মানুসিকতা কাজে লাগিয়ে সারা বাংলাদেশের প্রশংসার কুড়িয়েছেন। পরবর্তি মেয়র নির্বাচনে অবশ্য তিনি হেরে যান। পরে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের। বন্ধু যে অকালে ঝড়ে যাবে যেমন বোঝেননি ইকবাল হোসেন তাপস, বুঝতে পারেনি গোটা বরিশালের মানুষ।
বরিশাল-উন্নয়নের রুপকার হিরণের মৃত্যুর পর নতুন মেয়র আসেন বিএনপির আহসান হাবিব কামাল। অপরুপ সৌন্দর্যে গড়া হিরণের সাজানো বরিশাল-কে শেষ করে দেন কামাল। উন্নয়নতো দুরের কথা নগরের মানুষের অভিযোগ,নির্বাচিত পাঁচ বছরে একদিনের জন্যও তাকে দেখা যায়নি অনেক ওয়ার্ডে। বর্ধিত এলাকার মানুষের অবিযোগই বেশি। বন্ধুর হাতে গড়া স্বপ্নের বরিশাল অবহেলায় পতিত হবে এমনতো হতে পারে না প্রশ্ন তাপসের।
সময় এসেছে সিটি নির্বাচনে নিজেকে আবির্ভাব করার। হিরণের মৃত্যুর পর মাঝে মাঝে ওয়ার্ডগুলোত যাতায়াত শুরু করেন তাপস। মানুষের মনের অজানা কস্টগুলো জানতে থাকেন। বড় দুই দলের ভিড়ে কোনো ঝামেলায় না গিয়ে সরকারি বরিশাল কলেজে জাতীয় ছাত্র সমাজের সাথে যুক্ত থাকাতে জাতীয় পার্টির সাথে যোগাযোগ রাখেন সবসময়। দলের বিভিন্ন প্রগ্রামে সাধ্যমত অর্থসহয়তা দিয়ে জাপার রাজনিতীতে ইকবাল হোসেন একসময় কেন্দ্রীয় নেতায় আসিন হন।
জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ ইমেজ সম্পন্ন তাপসকে দলের মনোনয়ন প্রদান করেন। এর আগে নগরের রিকশা চালক থেকে শুরু করে সমাজের সর্বমহলের কাছে নির্বাচনে আসার বিষয়ে জানান দেন তাপস। বিভিন্ন মতবিনিময় সভায় তাপসকে স্থানিয় জনসাধারণ সমার্থন দিলে মেয়র নির্বাচন স্বপ্নের নিকটে। তিন যুগেরও বেশি সময়ে ঝিমিয়ে থাকা বরিশাল-জাপার সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিবৃদ্ধির লক্ষে নিরলস কাজ করে যান। নবীন প্রবীন সব বয়সের নেতাকর্মী সমর্থকদের একত্র করতে সক্ষম হন। এরশাদ আমলের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে নতুন ভোটারদের কাছে টানেন।
গত ১০ জুলাই প্রতিক বরাদ্দের দিন রাজশাহীতে জাপার প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও এরশাদ বরিশালের নির্বাচনে অটল থাকেন। ইকবাল হোসেন তাপস জাপার তৃনমূল নেতাদের নিয়ে তুমুল প্রচারনা করে তীব্র প্রতিদন্ধিতায় শামিল হন। এমন অবস্থায় নির্বাচনের মাত্র পাঁচ দিন আগে জাপার কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহারে মৌখিক নির্দেশনা আসে। কিন্তুু রাত দিন খেয়ে না খেয়ে কঠিন পরিশ্রম করা ইকবাল হোসেন তাপসের অনুসারীরা মাঠ ছাড়তে নারাজ। ক্ষোভ বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে তাপসকে বাধ্য করা হয় ভোটের মাঠে থাকার জন্য। কারোণ হিসেবে জনগণকে দেয়া ভোট প্রদানের দাওয়াতকে গুরুত্ব দেয়া হয় স্থানিয় তৃনমূল জাপার নেতারা। সর্বশেষ কেন্দ্র থেকে ২৭ জুলাই শুক্রবার তাপসকে বহিস্কারের মৌখিক বক্তব্য এলে ঘটে বিপরীত ঘটনা। খবর শুনে তৃনমূল নেতাকর্মী সহ আমজনতা নির্বাচনি অফিসে এসে বিক্ষোভ করে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষোনা দেয়। জনতার চাপের মুখে ইকবাল হোসেন তাপসও অনড় থাকেন,ঘোষোনা দেন মরে গেলেও জনগণকে দেয়া ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না। লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে ভোটের দিন পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। সব বাঁধা পেড়িয়ে আলোকিত এক মেয়র প্রার্থীর নাম ইকবাল হোসেন তাপস। নির্বাচনি মাঠে যতটুকু সরব,স্যোসাল মিডিয়ায়ও তাপস হয়ে ওঠেন রাজনৈতিক হিরো।