#

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সান্ধ্যকালীন (ইভনিং) কোর্সের বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে তা বাতিলের অনুরোধ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। এর দুদিন পর এই কোর্স বাতিলে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ইভনিং শিফট সিস্টেমটা ভালো লাগে না। এটা বাতিল করা যায় কিনা সেটা আপনারা বিবেচনায় নিবেন। অন্যদিকে, ইউজিসির চিঠিতে বলা হয়, সান্ধ্য কোর্স পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে বিধায় এটা বন্ধ হওয়া দরকার। অর্থাত্ তাদের বক্তব্য স্পষ্ট।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা এই কোর্স বন্ধে কতটা আগ্রহী। তারা রাষ্ট্রপতির অনুরোধ বা ইউজিসির চিঠি কতটা আমলে নিচ্ছেন। তবে ইতিমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) সান্ধ্যকালীন কোর্সে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তবে এই প্রোগ্রামে যে সকল শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই ভর্তি করা হয়েছে তাদের কোর্স সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কোন বিধি নিষেধ থাকবে না। একইভাবে ইউজিসির নির্দেশনা মেনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও (কুবি) সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আবু তাহের জানিয়েছেন, বর্তমানে যাদের কোর্স চলমান তাদের কোর্স শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে। নতুন কোনও ব্যাচে সান্ধ্যকালীন কোর্সে আর শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না।

এই দুটি প্রতিষ্ঠান দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হলেও বাকিগুলো এখনো ‘সিদ্ধান্তহীনতায়’ ভুগছে বলে মনে করছেন অনেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোর্স চলবে কিনা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরো একমাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ও এ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন পুরোপুরি এই কোর্স ‘বন্ধ’ না হয়ে একটি কাঠামোর মধ্যে চলতে পারে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, কমিটি প্রতিবেদন দিলে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএতে প্রথমে সান্ধ্যকালীন কোর্স শুরু করে। এর পর ধীরে ধীরে ৫টি অনুষদে এই কোর্স চালু হয়েছে। ৩২৭ জন শিক্ষক সান্ধ্যকালীন কোর্সে পাঠদানে নিয়োজিত। বিজনের ফ্যাকাল্টির ডীন অধ্যাপক হুমায়ুন কবির বলেন, কোর্স চালু থাকবে কী বা না এ বিষয়য়ে শিক্ষকদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

চট্টগ্রাম শহরে ভবন ভাড়া নিয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স পরিচালনা করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যবসায় অনুষদের তত্ত্বাবধানে এই কার্যক্রম চলছে । তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরিন আখতার বলেছেন, এখনও ইউজিসির চিঠি অফিসিয়ালি পাইনি। তবে যেহেতু রাষ্ট্রপতি সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধের বিষয়ে বলেছেন এ কারণে এ কোর্স বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমির হোসেন বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সান্ধ্যকালীন কোর্স নেই। চলছে উইকেন্ড কোর্স। এই কোর্স নিয়ে রাষ্ট্রপতি কিংবা ইউজিসির পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তাই এই কোর্স নিয়ে কিছু ভাবছি না।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন