প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আইনজীবীদের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে তিনি একথা বলেন। খবর বাসসের
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে অন্যায় ও অবিচারের কোন স্থান হবে না। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা একটি মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মুক্ত দেশ গঠন করতে চাই।’
তিনি বলেন, তার সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আশা করি বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আর এভাবে আমরা দেশ গঠন করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন কিন্তু স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করার পর সেই বিচার বন্ধ করে দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার সম্পন্ন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করার মাধ্যমে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছি।’
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কর্মকান্ড তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের বাস্তবমুখী কর্মসূচির কারণে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা এ সাফল্য ধরে রাখতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জি-৭ রাষ্ট্রগুলো কানাডায় অনুষ্ঠেয় তাদের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি কাল সেখানে যাব। তারা বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনের ম্যাজিক সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।’
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ তাদের শুধু আশ্রয়ই দেয়নি, তাদের খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবাও দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘পুরো বিশ্ব এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আমরা সমগ্র বিশ্বকে পাশে পাইনি। কেউ আমাদের পাশে ছিল কেউ ছিল না। কিন্তু এবার আমরা সবাইকে পাশে পেয়েছি।’
সারাদেশে বিভিন্ন বার কাউন্সিল নির্বাচনে বিজয়ের জন্যে সরকারপন্থী আইনজীবীদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা তাদের আগামী দিনগুলোতেও বিজয়ের এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের বিজয় বলে যে ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরা জয়ী হতে এবং যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারি।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত অতিথিদের বিভিন্ন টেবিলে গিয়ে তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।
ইফতারের আগে দেশ ও জাতির শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৫ আগস্টে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেও মোনাজাত করা হয়।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা এহসানুল হক মোনাজাত পরিচালনা করেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, আইন সম্পাদক শ. ম. রেজাউল করিম, সাবেক বিচারপতি মেসবাহ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, ঢাকা জেলা বার এসোসিয়েশন, রাজশাহী জেলা বার এসোসিয়েশন, সিলেট জেলা বার এসোসিয়েশন, গাজীপুর জেলা বার এসোসিয়েশন, দিনাজপুর জেলা বার এসোসিয়েশন, শরিয়তপুর জেলা বার এসোসিয়েশন ও লালমনিরহাট জেলা বার এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কর্মকর্তাগণ প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।