অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, সন্তান ভালো ফলাফল করেছে, ভালো জায়গায় স্থান পেয়েছে এজন্য আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। আপনার সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে সব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময়টা অত্যন্ত পিচ্ছিল। তাদের স্বপ্নপূরণের জন্য এ পথ চলার হাতটা আরও শক্ত করে ধরতে হবে।

শনিবার (২০ মে) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি ও উচ্চশিক্ষা সহায়ক বৃত্তি-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নাগরিক সেবা দেওয়ার পরও ডিএমপি পরিবারের সন্তানরা এত ভালো রেজাল্ট করায় তিনি সন্তানের মায়েদের ধন্যবাদ জানান।

পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের গুরুত্ব উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, শত ব্যবস্তার মধ্যেও সন্তানকে সময় দিতে হবে। তাদের সঙ্গে খেলতে হবে, ঘুরতে যেতে হবে। আর বৃদ্ধ বয়সে পিতা-মাতার প্রতি খেয়াল রাখার জন্যও সন্তানদের অনুরোধ করেন তিনি।

যারা আশানুরূপ রেজাল্ট করতে পারেনি বা ভালো জায়গায় স্থান করতে পারেনি তাদেরও ভেঙে না পড়ে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মেধাকে যথোপোযুক্ত ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল জগতে কম থেকে ক্লাসের বাইরেও বেশি বেশি বই পড়ার গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে জঙ্গি ও মাদকচক্র তরুণ প্রজন্মকে টার্গেট করছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। তিনি বলেন, সাইবার বা ভার্চুয়াল জগৎ হলো বড় ফাঁদ। এ ফাঁদে কেউ যদি একবার ফেঁসে যায় তাহলে তার জীবটাই শেষ হয়ে যাবে।

সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হতে হবে-বঙ্গবন্ধুর এ বাণী ধারণ করে ডিএমপি পরিবারের মেধাবী সন্তানদের অনুপ্রেরণা জোগাতে এসএসসি, এইচএসসিতে এ প্লাস পাওয়া ও সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল, বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েটসহ বিভিন্ন পাবলিক ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান পাওয়া ৯৩৩ জনকে ১ কোটি ১৩ লাখ ৫২ হাজার শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ২০১৭ সাল থেকে এ মেধাবৃত্তি ও উচ্চশিক্ষা সহায়ক বৃত্তি দিয়ে আসছে।

অনুষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থী ও গর্বিত বাবা-মাকে অভিনন্দন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ পূণ্যভূমি রাজারবাগ থেকেই থ্রি নট থ্রি রাইফেল নিয়ে দেশমাতৃকার টানে আত্মত্যাগ করেছেন আমাদের পূর্বসূরিরা। তোমরা সেই দেশ প্রেমিকের সন্তান। শুধু ভালো রেজাল্ট করলে হবে না, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।

শুধু ভালো রেজাল্ট করলে হবে না, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে বলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।

শিক্ষাবৃত্তি অনুষ্ঠানের সভাপতি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, একটি পরিবার, সমাজ, দেশ গড়তে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন। তোমরাই হবে সেই দক্ষ জনশক্তি। এ অনুপ্রেরণা তোমাদের ভবিষ্যতে আরও উদ্দীপ্ত করে চলার পথ সুগম করবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী ও গর্বিত বাবা-মার কয়েকজন তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার, বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দ ও বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।