সদ্যোজাত শিশুটির এত রাগ!

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটা ছবি ওয়ালে ওয়ালে ঘুরছে। ছবিটি একদিনের এক শিশুর। ছবিটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এটি অন্য স্বাভাবিক শিশুর মতো নয়। চিকিৎসকের দিকে ভয়ানক রাগের ভঙ্গিমায় তাকিয়ে আছে সে।

লন্ডনভিত্তিক সামাজিক বিনোদন প্রকাশনা ল্যাডবিবল ও নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুটির নাম ইসাবেলা পেরেইরা ডি জেসাস। ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেরিও শহরের একটি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় তার। রদ্রিগো কুনস্টম্যান নামের এক ফটোগ্রাফার দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করেন।

অপারেশন থিয়েটার থেকেই ছবিটা তোলা। জন্মের পরপরই চিকিৎসকরা লক্ষ্য করেন, ইসাবেলার মুখটা ভার। সে কাঁদছে না। মনে হচ্ছিল সে যেন খুব রেগে আছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক নিয়মেই সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় শিশুটির। কিন্তু নাড়ি কাটার আগ পর্যন্ত মেয়েটি এমন গোমড়া মুখ করে ছিল, মনে হচ্ছিল সে যেন রেগে গেছে।

এই অদ্ভুত পরিস্থিতিতে চিকিৎসকারও কিছুটা ঘাবড়ে যান। তারাও ওই শিশুর ছবি তুলতে থাকেন। রদ্রিগো নামের ওই ফটোগ্রাফারকে তখন ডাকা হয় এমন পরিস্থিতি দেখে। তখন তিনিও ছবিটি তোলেন। বেশ কিছুক্ষণ শিশুটি এভাবেই চেয়েছিল চিকিৎসকদের দিকে।

সাধারণত শিশুরা জন্মের পরপরই কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এটা না করলে চিকিৎসকরা তাকে কান্নার জন্য প্ররোচিত করেন। কেননা শিশুটির শ্বাসযন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কান্না জরুরি। কিন্তু ইসাবেলা ছিল ব্যতিক্রম। সে একদম নিশ্চুপ ছিল। তারপর চিকিৎসকরা তার নাড়ি কাটার সিদ্ধান্ত নেন। এতে কাজও হয়। তখনই গোমড়া মুখ ছেড়ে কান্নাকাটি শুরু করে শিশুটি। এতে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন, ইসাবেলা সুস্থ রয়েছে।

রদ্রিগো ছবিটি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার পর মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ব্রাজিলিয়ান প্রকাশনা ক্রেসসারকে তিনি বলেন, ‘আমি লক্ষ্য করলাম যে, মেয়েটি চোখ মেলে আছে কিন্তু কান্নাকাটি করছে না। তার মুখটা গোমড়া ছিল। চিকিৎসক নাড়ি কাটার পর সে কেঁদে ওঠে।’

রদ্রিগো আর বলেন, ‘ছবিটা তোলার সময়ই আমি মনে করেছিলাম, এই ছবিটা মিম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এ রকম দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করা আসলে ভাগ্যের ব্যাপার।’

ইসাবেলার বাবার নাম রেনেতো পেরেইরা রোচা। মায়ের নাম ডায়ানে। পাঁচ সপ্তাহ পর ডাক্তারি পরীক্ষায় ডায়ানে নিশ্চিত হন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। পরে জানতে পারেন তিনি সাবকোরিওনিক হেমাটোমা (জরায়ু সংক্রমণ) রোগে ভুগছেন। এতে তার গর্ভপাতের সম্ভাবনাও ছিল।

ব্রাজিলিয়ান নিউজ পোর্টাল জি১-কে ডিয়ানে বলেছেন, ‘সাহসী হয়েই আমার মেয়ে জন্ম নিয়েছে। সে ইতোমধ্যে মিম (ভাইরাল) হয়ে গেছে।

তবে ইসাবেলা যে শুধু জন্মের সময়ই গোমড়ামুখী ছিল তা কিন্তু নয়। তার মা বলেছেন, ‘আমি যখন তার ডায়াপার পরিবর্তন করতে যাই কিংবা তার সেবা করতে থাকি, তখন সে আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। এভাবে সে প্রতিদিনই তার ব্যক্তিত্ব দেখিয়ে যাচ্ছে।’