#

আগমী দুই মাসের মধ্যে (মে-জুন) গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১০ সেপ্টেম্বর। খুলনা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়াদ ১০ অক্টোবর, সিলেটে ৬ নভেম্বর ও বরিশালে ১৩ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হবে।  সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ  রয়েছে। এ কারণে আগামী দুই মাসের মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ করে সংসদ নির্বচানমুখী হতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৫ সিটির নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে চায় ইসি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫ সিটির নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর পড়বে। এ কারণে সংসদ নির্বাচনের আগে ইসির জন্য অগ্নিপরীক্ষা হচ্ছে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আর নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

 

ইসি সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিন ধাপে পাঁচটি সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যে গাজীপুর, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। নির্বাচনি এলাকাগুলোয় ইতোমধ্যে সরকারদলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমেছে।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে এর প্রভাব পড়বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। আর সিটি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা ইসির জন্য সহজ হবে। তাই সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইসির জন্য একটি পরীক্ষা। বিএনপিসহ বড় দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হবে। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে যে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে, তা আরও বেড়ে যাবে। এর প্রভাব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পড়বে। তাই ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ইসিকে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ  নিতে হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণসহ সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনাররাও একাধিকবার নির্বাচনি এলাকাগুলোয় সফর করবেন। তারা অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন।  তাদের সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে আশ্বস্ত করবেন। ইসি নিজেদের নিরপেক্ষতার জানান দিবে, যা আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

 

নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ না নেওয়ায় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কমছে। ভোটকেন্দ্রে ভোটার নিয়ে আসেন মূলত প্রার্থীরা। এ কারণে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বেশি ভোট পড়ে।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই নির্বাচনে ভোট পড়ে ৫৮.৭৪ শতাংশ। এরপরে উপজেলা ও পৌরসভার নির্বাচনগুলিতে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা কমছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইসির জন্য অগ্নিপরীক্ষা। ইসি এখনো বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এসব সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইসির বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের বড় সুযোগ। আশা করি তারা সেই সুযোগ গ্রহণ করবেন।

 

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যত নির্বাচন করেছি, সবকটিই আমরা সততার সঙ্গে আন্তরিকভাবে করেছি। সিটি করপোরেশনসহ আগামী দ্বাদশ সংসদ ও অন্যান্য নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবো।

তিনি বলেন, সাংবিধানিকভাবে আমাদের দায়িত্ব যতটুকু, এর শতভাগ আমরা পালন করব। সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ ভোটে অংশ নিন। আমাদের উদ্দেশ্য হলো-অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন করা।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন