সংলাপের পরিবেশ চায় বিএনপি: আমীর খসরু

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

রাজনৈতিক সংকট নিরসনে বর্তমানে দেশে সংলাপের কোনো পরিবেশ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পাশাপাশি সংলাপের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর গুরুত্বারোপও করেন বিএনপির এই নেতা।

শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

 

নির্বাচনের পূর্বে সংলাপের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো ডেমোক্রেটিক অর্ডার নাই, যেখানে মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা সব প্রশ্নবিদ্ধ। যেখানে ডেমোক্রেটিক অর্ডার অ্যাবসেন্স, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অ্যাবসেন্স। সংলাপের জন্য তো একটা ডেমোক্রেটিক অর্ডার লাগে। সংলাপ ডেমোক্রেটিক অর্ডারেরই অংশ। বাংলাদেশে বর্তমানে যেখানে এগুলোর কোনোটাই নেই, সেখানে সংলাপের প্রশ্ন আসে কী করে? আগে সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, তারপর সংলাপ।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের টিম বাংলাদেশে কেন এসেছে! দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশে তো তাদের যেতে হচ্ছে না। কেন বাংলাদেশে এসেছে, এটা দেশের সবার কাছে যেমন প্রশ্ন, তাদের মনেও একই প্রশ্ন। কেন তাদেরকে আসতে হচ্ছে এখানে? স্বাভাবিকভাবে বর্তমান সরকারের অধীনে যে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ এটাই তাদের আসার মূল কারণ। আগামী নির্বাচন বিষয়ে বাংলাদেশের ওপর সারা বিশ্ব নজর রেখেছে। সবাই জানতে চাচ্ছে, বাংলাদেশের নির্বাচন আগামী দিনে আদৌ জনগণ ভোট দিতে পারবে কি না।

খসরু বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা বলছি, এই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ এদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, হবে না। নির্বাচনের আগেই সরকার আবারও ভোট চুরির সব ব্যবস্থা করছে। নতুন করে তাদের পছন্দ মতো ও অনুগত ডিসি, এসপি, ইউএনওর পোস্টিং দিচ্ছে। বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করছে, আক্রমণ করছে, হাত কেটে ফেলছে। বিএনপির জনসভায় আসার পথে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পদযাত্রা কর্মসূচিতে আক্রমণ করে আহত করেছে। বিএনপি নেতাদের বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করে তাদের প্রক্রিয়ায় জোর করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করবে। দেশের মানুষকে ভোটের বাইরে রাখবে। সুতরাং এ বিষয়গুলো পরিষ্কার। তাদের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, এই সরকারের অধীনে বাংলাদেশের মানুষ ভোট প্রয়োগ করতে পারবে না, তাদের পছন্দ মতো প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব মনে করে না, বাংলাদেশে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তারা এখানে আসার উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে বলেছ, গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বাংলাদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তাই তারা নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা বা ভারতে না গিয়ে, তারা বাংলাদেশে এসেছে।

পশ্চিমা কূটনীতিকদের টিম বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করতে এসেছে। প্রথমেই তারা বলেছে, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় তারা। তাদের এই ভাবনা থেকে ধারণা নিতে পারেন বাংলাদেশে তারা কী চায়। তারা মানবাধিকার চায়, শ্রমিকের অধিকার চায়। এখান থেকে বিষয়টা খুবই পরিষ্কার। ডিপ্লোম্যাটিক ল্যাঙ্গুয়েজে এর থেকে বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।