তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ভুলে যাওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সংবিধান থেকে আওয়ামী লীগ এক চুলও নড়বে না।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ‘শান্তি সমাবেশে’ এ কথা বলেন কাদের। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়, সারা বছরই রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ। সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বে না আওয়ামী লীগ। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ভুলে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে যেসব অপকর্ম হচ্ছে তা দুর্বৃত্তদের কাজ। এসব দুর্বৃত্তদের আওয়ামী লীগের কোনও সংগঠনে থাকার অধিকার নেই। অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, যদি ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চান, তবে নির্বাচনে অংশ নিন। আর কখনও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জনগণের ভোটচুরি করতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিদেশিদের কাছে ধর্না দিয়ে লাভ হবে না। এর আগেও আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমেও নির্বাচন বন্ধ করতে পারেননি তারা। এবারও পারবে না। আর কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এদেশে ফিরে আসবে না। ফ্যাসিস্টদের মতো নির্বাচন বাধাগ্রস্তের চেষ্টা না করে, বিএনপির প্রতি নির্বাচনে আসার আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচনে না আসলে তৃণমূলের কর্মীরাই বিএনপির নেতাদের ধাওয়া দেবে, আর তখন তারা ধাওয়া খেয়েও পালিয়ে বাঁচবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশকে সবক্ষেত্রে এগিয়ে নিচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার। বাংলাদেশে করোনার টিকা বিনামূল্যে দিয়েছে সরকার। বিশ্ব অর্থনীতি খারাপ অবস্থায় আছে। অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থা থেকে শেখ হাসিনার সরকারই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ একমাত্র আদালতের মাধ্যমেই সম্ভব বলে জানান কামরুল।
‘শান্তি সমাবেশে’ দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, যে বাংলাদেশ একসময় ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল, সেই দেশকে উন্নয়ন আর অগ্রগতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগের শাসনামলে।
তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে রাস্তায় নেমে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। শুধু এখনই নয়, সব সময় তারা দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করে গেলে। ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ছাড়া তারা আর কিছু করতে জানে না। কোনও পাগল এবং শিশুর হাতে মানুষ দেশের দায়িত্ব দিতে পারে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর নির্বাচন হবে না।
বিএনপি নেতাদের প্রতি সংবিধান অনুসারে বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে রাস্তায় না নামার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের উলফা নেতা অনুপ চেটিয়া আবারও বলেছেন, ২০০৪ সালে বিএনপির শাসনামলেও ১০ ট্রাক অস্ত্র আনা হয়েছিল। তারা দেশকে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছিল।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আন্দোলন আন্দোলন খেলা বন্ধ করুন। এটা করে আপনারা এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবেন না। বরং সরকারের উন্নয়নকে সহযোগিতা করে মানুষের আস্থা অর্জন করুন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুলের সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাইফুন্নবী চৌধুরী সাগরের সঞ্চালনায় শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন মহি,সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।