সংখ্যাতত্বে সুবিধাবঞ্চিত বাবুগঞ্জের সাত প্রতিষ্ঠানের চার শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী।

:
: ৫ years ago

সোহেল আহমেদঃ আসন্ন ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষার সেন্টার হওয়ার কথা ছিলো বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ। গ্রাম্য হত – দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ব্যয় কমানোই মুল উদ্দেশ্য। বরিশালের সাবেক জেলা প্রশাসক সরকারের বর্তমান যুগ্ন-সচিব হাবিবুর রহমানের অনুমোদনও দিয়েছিলেন। কিন্তুু বেকে বসে বরিশাল- শিক্ষা বোর্ড কতৃপক্ষ। একের পর এক কথা বলে শেষ পর্যায়ে সংখ্যার পরিসংখ্যানের অযুহাতে তা বাতিল করে দেয় তারা। এতে দির্ঘ দিন ধরে স্বপ্নদেখা সাত শিক্ষা প্রতিষ্টানের চার শতাধিক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়েছে। সরকারের ডিজিটালাইজেশন পদ্ধতির ব্যপক অগ্রগতি হলেও পরীক্ষার যাতায়াত ব্যয় কমানোয় সেন্টার করার পদক্ষেপটি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে বলে মন্তব্য সচেতন অভিভাবকদের।

অভিভাবক ও স্থানিয় সুত্রজানায়, উপজেলার সাত প্রতিষ্টানের কতৃপক্ষ চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজকে সেন্টার করার পক্ষে অনাপত্তি প্রদান করেন। যাতে করে সহজেই পায়ে হেটে নির্ভিগ্নে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারে। সে লক্ষে বরিশাল-জেলা প্রশাসনের অনুমোদনও পায় কলেজ কতৃপক্ষ। এর আগে উপজেলা নির্বাহি কতৃক গঠিত একাধিক টিম পর্যবেক্ষণ করে কলেজের (সেন্টার উপযোগী) পরিবেশ নিয়ে পজেটিভ রিপোর্ট করে। ফলে কলেজটি সেন্টার হচ্ছে এমন গুন্জন ছড়িয়ে পরে সর্বত্র। প্রায় চার শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবকরা দুরের চিন্তামুক্ত ছিলেন।
কিন্তুু শেষ মুহুর্তে এসে বরিশাল-শিক্ষা বোর্ড থেকে বলা হয় এবার চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজকে কেন্দ্র দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা।

এরপরই ওই এলাকার অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃস্টি হয়। শিক্ষা ব্যাবস্থায় সরকারের সংশ্লিষ্টমন্ত্রী সহ কর্মকর্তারা চাইছেন ডিজিটালাইজেশন পদ্ধতির গুনগত প্রয়োগ। যাতে করে স্বল্পব্যয়ে সন্তানদের পরীক্ষা দেওয়াতে পারে। এ ক্ষেত্রে ঘঠেছে ব্যতিক্রম। বরিশাল-শিক্ষাবোর্ড কতৃপক্ষের সেন্টার বঞ্চিত করার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ লক্ষ করা গেছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টান কতৃপক্ষ সহ এলাকার সাধারন মানুষের মধ্যে। সেন্টার নিয়ে কোনো অদৃশ্য শক্তি কাজ করেছে কিনা এমন সন্দেহ সচেতনমহলের।

প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ প্রতিবেককে মুঠোফোনে বলেন, বাবুগঞ্জে পাইলট হাইস্কুলটি কেন্দ্র হিসেবে চলমান রয়েছে। সেখানে আরেকটি সেন্টার বেমানান। তাছাড়া পাইলট হাইস্কুলে এখন ৬৫৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এ অবস্থায় অন্য একটি নতুন সেন্টার হলে এ সংখ্যা আরো কমে যাওয়ার আশংকায় তিনি এ বছর সেন্টার দিতে পারছেন না। সেন্টার না হলেও ভ্যনু করা যাবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এটি থানা নির্বাহির এখতিয়ার বলে মন্তব্য করেন। তবে বোর্ড চেয়ারম্যানের সংখ্যাতত্বের হিসেবকে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থী অভিভাবকরা মানতে নারাজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে, তারা জানান সরকার গ্রামকে শহর বানাবে বলেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সব ধরনের নাগরীক সুবিধার হবে আধুনিকায়ন। আর তৃনমূল কর্মকর্তারা পুরোনো হিসেব মেলাতে গিয়ে শত শত পরীক্ষার্থীর ভাগ্য পরিবর্তনে সহোযোগীতা করছেনা।

প্রসঙ্গে আলাপ করলে বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ প্রফেসর মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন,পরীক্ষার্থীর সংখ্যার বিষয়টি অনেকসময় বিবেচ্য নয় যদি সেন্টার প্রাপ্তিতে বিধি মোতাবেক অন্তত পাঁচটি প্রতিষ্টান একমত হয়। এখানে সেন্টার প্রাপ্তি বড় বিষয় নয় উল্লেখ করে এই শিক্ষক নেতা মনেকরেন,শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, নিরাপত্তা যদি বেশ অনুকুলে থাকে তবে সেন্টার দিতে বোর্ডের আপত্তি থাকার কথা নয়।
খোজ নিয়ে জানা গেছে,মোহোনগঞ্জ হাইস্কুল ও কলেজ,চাঁদপাশা হাইস্কুল,বায়লাখালি হাইস্কুল,ঘটকের চড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়,ডিগ্রীর চর,ইউপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ সাত শিক্ষা প্রতিষ্টান কতৃপক্ষ জেএসসি,এসএসসি’র সেন্টারের জন্য বরিশাল-জেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন জানায়।

এয়ারপোর্ট থানার নিকটেই বরিশাল-বাবুগঞ্জ লাখুটিয়া সড়কের পাশেই বিশাল মাঠ,নবনির্মিত চারতলা ভবনসহ একাধিক ভবন নিয়ে চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের অবস্থান। পাশে বকশির চড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিশাল মাঠকে নিরাপত্তা বেস্টুনিতে আবদ্ধ করা হয়েছে। লাখুটিয়ার বিশাল বাজারের নিকট প্রতিষ্টানটির অবস্তান। জনপ্রতি একজন পরীক্ষার্থীর প্রায় তিন হাজার টাকার পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে যাতায়াত ব্যয় কমে যেতো। বাবুগঞ্জ পাইলট হাইস্কুলে যেতে উল্লেখিত পরীক্ষার্থীরা যাতায়াতের জন্য লাখুটিয়া বাজারে অপেক্ষা করতে হবে।
লেখা ও ছবি: সোহেল আহমেদ।