মালিকদের প্রতি অনুরোধ রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আপনাদের জন্য উৎপাদন করে, আপনি ব্যবসা করেন, অর্থ উপার্জন করেন, আপনারা ভালো থাকেন, আপনার পরিবার ভালো থাকে, সেই শ্রমিকদের প্রতিও আপনাদের আন্তরিক হতে হবে। অর্থাৎ মালিক শ্রমিক ভাই ভাই, সবার জন্য সোনার বাংলা গড়তে চাই। মালিক শ্রমিক একে অপরের শক্তি হয়ে কাজ করতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশের মেহনতি শ্রমিকদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তার তনয়া শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের শ্রমিকদের জন্য মজুরি কমিশন গঠন করেছিলেন এবং ১ মে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই মেহনতি শ্রমিকদের কথা ভেবেছে। আমাদের প্রতিটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রামের তৃণমূল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমরা আমাদের সব নীতিমালা প্রণয়ন করে কার্যকর করে যাচ্ছি, যার শুভ ফল দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর তখন যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের কিন্তু ভোগ-বিলাসের প্রতি বেশি লক্ষ্য ছিল। কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে চাকচিক্যের মধ্য দিয়ে জনগণকে আকর্ষণ করতে চেয়েছিল তারা। শোষিত-বঞ্চিত মানুষ শোষিতই থেকে যায়।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, সেজন্যই আমরা দেখি ৯১ সালে শ্রমজীবী মানুষ তাদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য যখন আন্দোলন করে, তারা মজুরি পায়নি। পেয়েছিল গুলি। ১৯ জন মানুষকে ৯১ সালে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই শ্রমিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনা বিএনপি সরকার ঘটিয়েছিল। শুধু শ্রমজীবী মানুষ নয়, কৃষকরাও রেহায় পায়নি। সারের দাবিতে আন্দোলন করলে কৃষকদেরও গুলি হত্যা করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠানে যাতে শান্তি থাকে, আমাদের প্রবৃদ্ধি যেন উৎপাদনমুখী হয় এবং দেশের উন্নয়ন যাতে নিশ্চিত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে যেমন আমরা কাজ করি, সেই সঙ্গে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ সাধন কিসে হবে সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিই।
পোশাক খাতের দু-একটি দুর্ঘটনার জন্য দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যেন আর এমন অবস্থায় পড়তে না হয়, সে লক্ষ্যে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার।
বিদেশিদের কাছে নালিশ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, কিছু হলেই দেশের বাইরে গিয়ে বদনাম করা যে দেশের ভাবমূর্তির জন্য কতটা ক্ষতিকর, তারা তা বোঝেন না। শুধু নালিশই করেন। আমি একটা কথা বলে দিতে চাই, বাইরে কারও কাছে নালিশ করে কোনো সুবিধা হবে না।