শ্বশুড় পরিবারের নির্যাতনে বরিশালের তানজিলার মৃত্যুঃ স্বামী গ্রেপ্তার

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

অনলাইন ডেস্ক :: বরিশাল নগরীর মেয়ে ও ইডেন কলেজের ছাত্রী তানজিলা রহমান আয়নাকে নির্যাতনের পর বিষপান করিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৯ মাসের অন্ত:সত্ত্বা তানজিলাকে হত্যার এই গুরুতর অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গত ৮ আগস্ট (শনিবার) সকাল ১১টায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সাউধের খিল গ্রামের মোল্যা বাড়ির এই বিয়োগান্তের ঘটনায় পুলিশ ওই কলেজছাত্রীর স্বামী জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছে। জহিরুল ইসলাম জনি মোল্যা বাড়ির মো. মহসিন মোল্যার বড় ছেলে।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ইডেন ছাত্রী তানজিলার বড় ভাই সাইফুর রহমান বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। তানজিলা আক্তার আয়না ঢাকা ইডেন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রামগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সাউধেরখিল গ্রামের মোল্যা বাড়ির মহসিনের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম জনির সাথে ২০১৬ সালে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানাধীন ভাটিখানা এলাকার ‘পান্থ সড়ক’র নাবিকনীড়ের সাইদুর রহমানের মেয়ে তানজিলা আক্তারের বিয়ে হয়। পরিবারের লোকজন তানজিলার আগের আরেকটি বিয়ের সংবাদ গোপন রেখে জনির সাথে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে। পরে জনির মাধ্যমে বিষয়টা জানাজানি হলে দুই পরিবারের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। দুই পরিবারের দফায় দফায় বৈঠকের পর তানজিলাকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ সাউধেরখিল গ্রামে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে। এরই ফাঁকে তানজিলা অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েন। শুরু হয় তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন। তানজিলা তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালেও কোন কাজ হয়নি। গত ৮ আগস্ট তাকে নির্যাতনে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তানজিলার ভাই বোনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বরিশাল থেকে রামগঞ্জ এসে স্বামী জহিরুল ইসলাম ও তার বাবা, মা, চাচী এবং ছোট ভাইকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তানজিলার ভাই সাইফুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমার বোনকে জনি ও তার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। বেশ কয়েকমাস থেকে তানজিলার স্বামী আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে আমার বোন মাঝে মাঝে গোপনে আমাদের সাথে কথা বলতো। শুক্রবার রাতেও সে আমাদের সাথে কথা বলেছে। এরপর শনিবার সকালে তার স্বামী জনি ফোন করে আমাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, গৃহবধূ তানজিলা মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হলে স্বামী জহিরুল ইসলাম জনিকে গ্রেপ্তার করে লক্ষ্মীপুর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’