শেষ চারে যেতে বরিশালের জয় লাগত-ই। কঠিন ম্যাচে প্রতিপক্ষ ঢাকা। যারা প্রতিযোগিতায় বাজে শুরুর পর ছন্দ পেয়ে ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু ডু আর ডাই ম্যাচে বরিশালের খেলোয়াড়রা তেঁতে উঠল। মুশফিকের ঢাকা দুর্দান্ত ফর্মের ধারাবাহিকতা দেখাল। মিরপুরে জমে উঠল দুই দলের লড়াই। শেষ পর্যন্ত বিজয়ের হাসি হাসল বরিশাল। মুশফিকের ঢাকাকে মাত্র ২ রানে হারিয়ে তামিমের বরিশাল জায়গা করে নিল শেষ চারে।
মিরপুর শের-ই-বাংলায় আগে ব্যাটিং করে বরিশাল ৩ উইকেটে ১৯৩ রান তোলে। জবাবে নাঈমের অসাধারণ সেঞ্চুরির পরও ২ রানের আক্ষেপে পুড়ে ঢাকা। এ ম্যাচ জিততে মুখিয়ে ছিল ঢাকাও। জিতলে পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুইয়ে থাকা যেত। সেক্ষেত্রে তারা খেলতে প্রথম কোয়ালিফায়ার, ফাইনাল যাওয়ার জন্য সুযোগ পেত দুই ম্যাচ। কিন্তু তিনে থেকে তাদের খেলতে হবে এলিমিনেটর ম্যাচ। সেটাও এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই। ম্যাচটি হবে সোমবার দিনের প্রথম ম্যাচেই।
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ম্যাচে ধ্রুপদী ব্যাটিং করেছেন নাঈম শেখ। তুলে নেন টুর্নামেন্টের তৃতীয় সেঞ্চুরি। মাত্র ৬০ বলে পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। ৬৪ বলে ৮ চার ও ৭ ছক্কায় ১০৫ রানের নজরকাড়া ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন। দলকে জেতাতে না পারলেও বিধ্বংসী ইনিংসে নাঈম নিজের সামর্থ্যের জানান দেন ভালোভাবেই।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে বরিশালের শুরুটা ছিল ভালো। দুই ওপেনার তামিম ও সাইফ পাওয়ার প্লে’তে তুলে নেন ৫০ রান। এতে সাইফের অবদান-ই ছিল বেশি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলের রান বাড়ানোর দায়িত্ব পেয়েছিলে তিনি। তামিম ধীরস্থির হয়ে ছিলেন ইনিংস গড়ার কারিগর। কিন্তু খোলস থেকে বের হতে গিয়ে উইকেট হারান বরিশালের অধিনায়ক। ১৭ বলে ২ চারে ১৯ রান করে আল-আমিনের বলে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দেন সীমানায়।
সাইফ ৪২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর ইনিংস বাড়াতে পারেনি। রুবেল হোসেনের বল উড়াতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ৮ চারে ১১৬.২৮ স্ট্রাইক রেটে নিজের ইনিংসটি সাজান সাইফ। তিনে নামা পারভেজ হোসেন ইমন ভালো করতে পারেননি। ১ চার ও ১ ছক্কায় ১৩ বলে সমান ১৩ রান করে দেশের দ্রুততম টি-টোয়েন্টির রেকর্ডধারী আউট হন মুক্তার আলীর বলে।
পরের গল্পটা পুরোটাই আফিফ ও হৃদয়ের। ডু অর ডাই ম্যাচে দুই ব্যাটসম্যান ৩৮ বলে ৯১ রানের জুটি গড়ে দলের রান নিয়ে যান চূড়ায়। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দুইজনই দ্যুতি ছড়ান। শেষ ওভারে দুইজন পেরিয়ে যান হাফ সেঞ্চুরি। আফিফ ২৫ বলে ১ চার ও ৫ ছক্কায় করেন ৫০ রান। হৃদয় ২২ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৫১ রান। প্রথম ৬ ওভারে ৫০ রান পাওয়া বরিশাল শেষ ৬ ওভারে তোলে ৬৯ রান। বল হাতে রুবেল, আল-আমিন ও মুক্তার আলী নেন ১টি করে উইকেট।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো ছিল ঢাকার। সাব্বির ও নাঈম সতর্ক শুরুর পরও ৬ ওভারে তুলে নেন ৫২ রান। তবে সপ্তম ওভারের শুরুতেই তাদের শিবিরে আঘাত করে সোহরাওয়ার্দী শুভ। প্রথমবার খেলতে নেমে প্রথম বলে বাঁহাতি স্পিনার নেন উইকেট। সাব্বিরকে ফেরানোর পর মুশফিক ও আল-আমিনের উইকেট একই ওভারে নেন শুভ। মুশফিক রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন। আল-আমিন ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
এরপর আকবর আলী ও নাঈম হাসান দলের রান বাড়ানোর দায়িত্ব নেন। দুইজন দারুণ জুটিতে দলের রান বাড়ান। ১৪ ওভারে তাদের হাত ধরে ঢাকার রান ৩ উইকেটে ১১২। শেষ ৩৬ বলে জয়ের জন্য দরকার ৮২ রান। রাব্বীর করা ১৫তম ওভারে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ২২ রান তুলে নেন নাঈম। পরের ওভারে তাসকিনকেও এক ছক্কা ও চার হাঁকান এ বাঁহাতি। তার তোপে পুড়ে সুমন খান ১৭তম ওভারেও হজম করে ছক্কা। এক ওভার পর তাসকিনকে দুই চার বানিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন নাঈম। হাফ সেঞ্চুরি থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে মাত্র ১৭ বল খেলেন নাঈম। যেখানে ছক্কাই হাঁকান ৫টি।
নাঈম ১৯তম ওভারে সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে ঢাকা। শেষ ওভারে ঢাকার জয়ের জন্য লাগত ১৭ রান। প্রথম বল ওয়াইড হলেও রান আউট হয়ে রাব্বী (৪১) ফেরেন সাজঘরে। আকবর দ্বিতীয় বলে এক রান নেন। তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকানোর পর চতুর্থ বলে আউট জন। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে আকবর কোনো রান নিতে পারেননি। দুই ডট বলেই আশা শেষ হয়ে যায় ঢাকার। শেষ বলে আকবর ছক্কা হাঁকালেও ২ রানের ব্যবধান কমাতে পারেননি।
ঠান্ডায় সমস্যা হওয়ায় তামিম ফিল্ডিংয়ে নামতে পারেননি। তার পরিবর্তে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে তুমুল প্রতিদ্বনদ্বীতাপূর্ণ ম্যাচে দলের বাকিরাও মিরাজের সাহায্যে এগিয়ে আসেন।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com