রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন উপমহাদেশের এক অনন্য প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ।’
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে দেয়া বাণীতে একথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি এই মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
তিনি বলেন, ‘শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন উপমহাদেশের এক অনন্য প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ও নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর কাছে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য, সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের সভাপতি (১৯১৬-১৯২১), কলকাতার মেয়র (১৯৩৫), অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (১৯৩৭-১৯৪৩), পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (১৯৫৪), পূর্ব বাংলার গভর্নরের (১৯৫৬-১৯৫৮) পদসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী ও বাগ্মী। একাধারে বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় অনর্গল বক্তৃতা করতে পারতেন। দক্ষ রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক হিসেবে প্রায় অর্ধ-শতাব্দীর অধিককাল তিনি গণমানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘হক সাহেব ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থে ১৯৩৬ সালে কৃষক প্রজা পার্টি (কেপিপি) এবং ১৯৫৩ সালে শ্রমিক-কৃষক দল প্রতিষ্ঠা করেন। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শেরে বাংলা এ অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, রাজনীতি, সমাজ সংস্কারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। বাংলার শোষিত ও নির্যাতিত কৃষক সমাজকে ঋণের বেড়াজাল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে তার উদ্যোগে গঠিত ‘ঋণ সালিশী বোর্ড’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বঙ্গীয় চাকরি নিয়োগবিধি, প্রজাসত্ত্ব আইন, মহাজনী আইন, দোকান কর্মচারী আইন প্রণয়নের ফলে এ অঞ্চলের অবহেলিত কৃষক-শ্রমিক উপকৃত হন।’
‘এই বরেণ্য রাজনীতিবিদ ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। কৃষক-শ্রমিক তথা মেহনতি মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার অবদান জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। এ কে ফজলুল হকের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে। আমি এ মহান নেতার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’