করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সেবায় বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে প্রথমে ছিল ১০টি বেড।
এরপর ধাপে ধাপে তা ৫০, ১৫০ ও ২০০ বেডে উন্নীত হয়। এক বছরের মধ্যে সেবার পরিসর বাড়তে বাড়তে সর্বশেষ ৩০০ বেডের ব্যবস্থা হয়েছে।
তবে বিশাল এ ইউনিটের দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র দুজন চিকিৎসক। এ অবস্থায় রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ও আশেপাশের জেলায় তেমন ব্যবস্থা না থাকায় রোগীর চাপ বাড়ছে বরিশালে। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগী, প্রয়োজন হচ্ছে জরুরি চিকিৎসার।
এ পরিস্থিতিতে প্রধান ভরসা বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতাল। সেখানকার করোনা ইউনিট এখন রোগীতে পরিপূর্ণ।
গলিপথ, সিঁড়ির পাশেও দেখা যাচ্ছে শুয়ে আছেন করোনা রোগী। অসহায় রোগীদের সেবায় স্বজনরাও বাধ্য হয়ে অবস্থান করছেন সেখানে।
করোনা ইউনিটের ৩০০ রোগীর সেবা দিতে সেখানে দায়িত্বে আছেন মাত্র দুজন চিকিৎসক। মূলত তিন শিফটে ৪৫ জন নার্স সামাল দিচ্ছেন সব।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও রয়েছেন প্রয়োজনের তুলনায় কম। সবদিক বিবেচনায় করোনা ইউনিটে আর বেড বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।
হাসাপাতাল সূত্রে জানা যায়, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গতবছর নির্মিত একটি ভবনে করোনা ইউনিট চালু করা হয়। প্রথমে ১০ বেড দিয়ে শুরু হয় করোনা ইউনিট।
এরপর প্রয়োজন বাড়ায় ৫০ করা হয়। স্বল্প সময়েই হাসপাতালের বেড বেড়ে ২০০ তে উন্নীত হয়। এখন তা ৩০০ বেডের করোনা ইউনিট।
শুরুর দিকে নতুন ভবনের প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত করোনা ইউনিট চালু ছিল। তবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবর্তন আনা হয় করোনা ইউনিটের।
প্রথম তলা বাদ দিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার সাথে যোগ করা হয় চতুর্থ ও পঞ্চম তলাকে।
করোনা ইউনিট সোমবার ছিল পরিপূর্ণ। সকাল ৮টা পর্যন্ত আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ৩০৭ জন। বিকেলে রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২২ জন। কিন্তু তারপরও রোগী ভর্তির জন্য অনেককে ঘুরতে দেখা যায়।
হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার এখানে করোনা ইউনিটে ৩শ’ বেডের বেশি করা সম্ভব নয়। আমার তো অন্য সাপোর্ট নেই, যা সম্ভব তা করেছি।
যাদের বেশি ক্রিটিক্যাল অবস্থা তাদের রাখছি। অন্যদের ভর্তি নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ভর্তি নিয়ে তো লাভ নেই, সেবাও তো দিতে হবে।
‘করোনা ইউনিটে আরও বেশি রোগী ভর্তি নিলে, সকলে ভোগান্তির মধ্যে পড়বে। এমনিতেই চিকিৎসক ও নার্স সংকট রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে কম।
সব মিলিয়ে সংকটের মধ্যে দিয়েই ৩শ’ বেডের এই ইউনিট পরিচালনা করা হচ্ছে। দুইজন চিকিৎসক ও ৪৫ জন নার্স তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন। সোমবার করোনা ইউনিটে ১৯ জন মারা গেছেন।’
বরিশালের সিভিল সার্জন মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে জায়গা সংকুলান হচ্ছে না।
সোমবার থেকে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ১৩ বেডের একটি করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে।’