শেবাচিমে চাঞ্চল্যকর নবজাতক হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে চাঞ্চল্যকর নবজাতক হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হত্যাকান্ডের প্রায় ৬ দিন অতিবাহিত হলেও কোতয়ালী থানা পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত আয়া হালিমা বেগম ব্যতীত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

এদিকে মামলার আসামীরা মামলা তুলে নিতে বাদীকে বিভিন্ন মারফতে হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, নলছিটি উপজেলার মোল্লার হাট ইউনিয়নের কামদেবপুর গ্রামের বিউটি বেগমের (২৫) সন্তান প্রসব হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। একারনে বিউটি বেগমকে শেবাচিম হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

২১ আগস্ট সকাল সাড়ে নয়টায় বিউটি বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত অপারেশন করার জন্যে ৫ম তলায় অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিতে বলেন। স্ত্রীকে দ্রুত ওটিতে নেয়ার বিষয়টি লেবার ওয়ার্ডের কর্তব্যরত আয়া ও সেবিকাদের গুরুত্বসহকারে জানানো হয়।কিন্তু টাকা ছাড়া ট্রলিতে উঠানো তো দূরের কথা বিউটিকে ওটিতে নেয়নি কর্তব্যরত আয়া ও সেবিকা । পরে বিউটিকে ওটিতে বিলম্ব করে নেওয়া হলে অপারেশনে মৃত নবজাতকের দেখা মেলে ।

এঘটনায় বিউটি বেগমের স্বামী মোঃ সোহেল হাওলাদার বাদী হয়ে ২১ আগস্ট বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। লেবার ওয়ার্ডের ৪ জন আয়ার নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামী করা হয়। আসামী ৪ জন আয়া হলেন উজিরপুর উপজেলার সুলতান হাওলাদারের স্ত্রী মোসাম্মত হালিমা বেগম(৫০),বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী গ্রামের সন্ধ্যা রানী মালী(৩৫),কাঠালিয়া উপজেলার কৈখালী গ্রামের মোসাম্মত পপি আক্তার(৩৭) ও মোসাম্মত বুনিয়া বেগম(৪০)।

এদিকে হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যে হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের সেবিকা (ইনচার্জ) শাহনাজ পারভীন ও আসামীরা বাদীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লেবার ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, ইনচার্জ শাহনাজ পারভীনের শেল্টারেই দীর্ঘদিন আয়ারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আর এ কারনে লেবার ওয়ার্ডে একাধিক নবজাতক চুরি করার মত ঘটনাও ঘটেছে। লেবার ওয়ার্ডে গিয়ে মামলার আসামী সন্ধ্যা রানী মালী ও মোসাম্মত পপি আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাতে কথা হলে তারা বলেন,ইনচার্জ আপা(শাহনাজ পারভীন) আমাদের বিষয়টি দেখবেন। তারা আরও বলেন চলমান মামলা নিয়ে কী করনীয় সে লক্ষ্যে আজ(সোমবার) আলোচনায়ও বসবেন শাহনাজ আপা।

মামলার বাদী মোঃ সোহেল হাওলাদারের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, লেবার ওয়ার্ডেই আমার স্ত্রী এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে। আসামীরা আমার সামনেই ঘোরাফেরা করছে। বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন,নবজাতক হত্যা মামলায় তদন্ত সাপেক্ষে সকল আসামীকেই গ্রেপ্তার করা হবে।