শেখ হাসিনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে জনগণ: কাদের

লেখক:
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো বিদেশি শক্তির পরোয়া করেন না, মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদেশি শক্তি নয়, তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে দেশের জনগণ।

 

শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রতিবেশী দেশ আওয়ামী লীগকে নিয়ন্ত্রণ করে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাব দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল বলে, আমাদের নাকি প্রতিবেশী দেশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফখরুল সাহেব, শেখ হাসিনাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি, জয় বাংলার চেতনা।

 

‘দেশি-বিদেশি কোনো শক্তি নয়, আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশের জনগণ। আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশের সংবিধান। এই সংবিধানের বাইরে আমরা যাব না।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৮ অক্টোবর পালিয়ে গিয়ে এখন বেসামাল হয়ে প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করছে। আমি তাকে বলতে চাই, বন্দি মুক্তির কথা বলেন, লজ্জা করে না? জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দলের ৬২ হাজার নেতাকে জেলে রেখেছিল। আপনাদের কতজন জেলে আছে? আমাদের ৩ হাজার নেতাকর্মী ও সরকারি অফিসারদের গুম করেছিলেন জিয়াউর রহমান।

 

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, এটা সত্যি নয়। ১১ হাজার স্বাধীনতাবিরোধী কারাগারে ছিল, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে এদের মুক্তি দিয়েছিল। যার মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল ৭১৩ জন। এদের মুক্তি দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। এই ইতিহাস ভুলে গেছেন? কথায় কথায় আজকে বলেন, কারাগার। আমি কি মিথ্যা বলেছি? জিয়াউর রহমান কী করেছিল, এর প্রমাণ আছে।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা যেন নিজেদের শত্রু নিজেরা না হই। আপন ঘরে যাদের শত্রু, তাদের বাইরের শত্রুর দরকার নেই।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, অপকর্ম যারা করেন, শুদ্ধ হয়ে যান। মনে করেছেন, চুপচাপ আছে, কেউ শাস্তি পাচ্ছে না কেন? শাস্তি পাবে। গত নির্বাচনে ৭৫ এমপি মনোনয়ন পায়নি। এটাও শাস্তি। এখানে সব শেষ নয়। শাস্তি দেওয়ার অনেক সময় আছে। সময়মতো হিসাব হবে। কেউ রেহাই পাবেন না।

 

‘দল করলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলবেন। ঘরের ভেতর ঘর করবেন না, মশারির মধ্যে মশারি খাটাবেন না। শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবেন, তাদের অবশ্যই শাস্তি ভোগ করতে হবে। শেখ হাসিনার শাস্তি দেওয়ার একটু ভিন্ন রকম। যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা ঠিকই বুঝেছেন। যারা পাননি, তাদের স্মরণ করে দিচ্ছি।’

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে মুক্তিযুদ্ধের হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধের প্রত্যাবর্তন বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ১৭ মে নিষিদ্ধ বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তন। আদর্শের প্রত্যাবর্তন। আমাদের গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন। তিনি সংগ্রাম করে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করেছেন।

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কবি নির্মলেন্দু গুণ, শহিদ আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী আবদুল আলিমের মেয়ে নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ।