পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি নম্বর পান যে পরীক্ষার্থী, মেধাতালিকায় তারই নাম শীর্ষে থাকে। এমনটাই দেখা যায় বা দেখে অভ্যস্ত সবাই। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গে স্কুলে গ্ৰুপ-ডি বা চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় দেখা গেছে এর ব্যতিক্রম। ১০টি জেলায় ৫০ জনের ওই তালিকায় শূন্য পেয়ে ছয় জন মেধাতালিকার প্রথমে রয়েছেন। সেন্ট্রাল ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে বলে রোববার জানিয়েছে আনন্দবাজার অনলাইন।
কমিশনের সার্ভার অবশ্য বলছে মেধাতালিকায় আসা এই পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৩। তবে সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে, ওই পরীক্ষার্থীরা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। সাদা খাতা জমা দিয়ে ৪৩ নম্বর পেয়েছেন। শূন্য পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছেন হুগলি, বীরভূম এবং জলপাইগুড়ির এক জন করে পরীক্ষার্থী। মালদহে তিন জন শীর্ষে রয়েছেন। তাদের মধ্যে এক জন করে রয়েছেন সাধারণ, তফসিলি জাতি (এসটি) এবং তফসিলি জনজাতি (এসসি)-র।
এই তালিকা অনুযায়ী শূন্য পেয়ে বাঁকুড়ায় ছয় জন মেধাতালিকায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে আবার এক জন রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। বীরভূমে শূন্য পেয়েছেন তিন জন। শীর্ষে এক জন। বর্ধমান এবং জলপাইগুড়িতে এক জন করে শূন্য পেয়েছেন। শূন্য পাওয়ার তালিকায় রয়েছেন কোচবিহারের দুজন। এই তালিকায় থাকা দক্ষিণ দিনাজপুরের সাত জনই শূন্য পেয়েছেন। জেলায় তাদের মধ্যে এক জনের স্থান দ্বিতীয়। কোনও নম্বর না পেয়েও হুগলির তিন জনের মধ্যে দুজন মেধাতালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। মালদহের ১৫ জন শূন্য পেয়েছেন। এ ছাড়া তালিকায় রয়েছেন হাওড়ার সাত জন।
সিবিআইয়ের দাবি, এই ৫০ জনের নিয়োগ বা সুপারিশে উত্তরপত্রের পিছনেও উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) তৈরি করেছিল কমিশন। জনসমক্ষে যে উত্তরপত্র আনা হয়েছিল সেগুলি নকল। কারণ, কলকাতায় তাদের সার্ভার বলছে এই ৫০ জন ৪৩ নম্বর করে পেয়েছেন। কিন্তু আসল উত্তরপত্র বলছে অন্য কথা (যা উদ্ধার করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে)। সেখানে দেখা যাচ্ছে তারা সবাই শূন্য পেয়েছেন। শুধু তাই নয় মূল মেধাতালিকা (প্যানেল) বাদ দিলে ওয়েটিং লিস্টেও এ ভাবে কারচুপি করে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
মামলাকারীদের এক আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘কলকাতা হাই কোর্ট আগেই বলেছিল মুড়ি মুড়কির মতো দুর্নীতি হয়েছে। এখন তা বেরোচ্ছে। কমিশন নিজেই বেআইনি চাকরি প্রাপকদের সেই তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় শীঘ্রই জনগণের সামনে আসবে।’