শুরু হলো ঐতিহাসিক চারদিনের টেস্ট

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চারদিনের টেস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো। পোর্ট এলিজাবেথে বক্সিং ডে’র দিন দিবারাত্রির এই ঐতিহাসিক টেস্টের সাক্ষী হচ্ছে জিম্বাবুয়ে আর দক্ষিণ আফ্রিকা।

ঐতিহাসিক এই টেস্টে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রায় দুই বছর পর টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন করা এবি ডি ভিলিয়ার্স প্রোটিয়া দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই টেস্টে। তবে ডেল স্টেইনের ফেরার কথা থাকলেও ভাইরাস সংক্রমণের কারণে একাদশে নেই তিনি।

ক্রিকেট কী অদ্ভূত। একই দিনে দুটি টেস্ট মাঠে গড়িয়েছে পৃথিবীর দুই প্রান্তে। একটি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। অন্যটি দক্ষিণ আফ্রিকার পোর্ট এলিজাবেথে। প্রথমটি অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্ট। দ্বিতীয়টি দক্ষিণ আফ্রিকা আর জিম্বাবুয়ের মধ্যে একমাত্র টেস্টের সিরিজ।

বৈপরীত্য এটুকু হলে কথাই ছিল না। কারণ, এমন তো হতেই পারে। পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন প্রান্তে ৫টি টেস্টও যদি মাঠে গড়ায় এবং সেগুলোর সময় যখনই হোক- তা নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না; কিন্তু বৈপরীত্য অন্য জায়গায়। মঙ্গলবার বক্সিং ডেতে শুরু হওয়া দুটি টেস্টই যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন নিয়মে! মেলবোর্ন টেস্টে খেলা হচ্ছে এতদিন ধরে জানা-চেনা এবং চলে আসা ক্রিকেটের নিয়মানুসারে।

কিন্তু পোর্ট এলিজাবেথে যে টেস্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেটি থেকেই নতুন করে নিয়ম প্রবর্তন করতে যাচ্ছে আইসিসি। এই প্রথমবারেরমত চারদিনের টেস্টের নিয়ম প্রবর্তন করতে যাচ্ছে আইসিসি। যার পরীক্ষামূলক আয়োজন হয়ে যাচ্ছে পোর্ট এলিজাবেথে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ের মধ্য দিয়ে। ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকাকে (সিএসএ) এই টেস্টে নতুন পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।

চারদিনের এই টেস্টের নিয়মের সঙ্গে এখনও পরিচিত নয় কেউ, কোনো দেশ কিংবা কোনো খেলোয়াড়। এ কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে খেলোয়াড়দের সামনে পুরোপুরি নতুন একটি পরিবেশ, সম্পূর্ণ অজানা-অচেনা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে ক্রিকেট।

কেমন এই চারদিনের এই টেস্ট? ইতিমধ্যেই কিছু বিধি-বিধান বেধে দিয়েছে আইসিসি। ৫ দিনে মোট খেলা হয় সর্বোচ্চ ৪৫০ (৯০*৫) ওভার। সে হিসেবে চার দিনের ম্যাচে যেন ওভারের হেরফের না হয়, সে কারণে প্রতিদিন বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ৮ ওভার করে। সে হিসেবে ৪ দিনে খেলা হবে ৩৯২ ওভার। তবুও ৫ দিনের তুলনায় ৫৮ ওভার খেলা কম হবে। তাতে কী, ৯০ ওভার করে হলে তো আরও ৩২ ওভার খেলা কম হতো। সেটা তো বাড়িয়ে নেয়া গেলো, ৮ ওভার বাড়ানোর কারণে।

চার দিনের টেস্টে প্রতিদিন খেলা হবে সাড়ে ছয় ঘণ্টা করে। পাঁচ দিনের ম্যাচের থেকে আধঘণ্টা বেশি। প্রথম দুটো সেশনকে ভাগ করা হয়েছে দু’ঘণ্টার জায়গায় এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট করে। প্রথমার্ধের পর লাঞ্চ ব্রেকের বদলে হবে ২০ মিনিটের টি-ব্রেক। আর দ্বিতীয় অর্ধের পর ৪০ মিনিটের ডিনার ব্রেক। দিনের খেলায় যে সময় নষ্ট হবে সেটা পরের দিনে নিয়ে যাওয়া হবে না। ফলোঅন ২০০ রানের বদলে ১৫০ রানে করানো যাবে।

এত বছরে টেস্ট ম্যাচে নানা পরিবর্তন হয়েছে। তিনদিন থেকে ছয়দিন। কখনও অনির্দিষ্টকালের জন্য। শেষ অনির্দিষ্টকালের জন্য টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল ১৯৩৮-৩৯ সালে। সেবার ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের ম্যাচ থেমেছিল ১০দিন পর ইংল্যান্ডের জাহাজ ধরার জন্য।

দক্ষিণ আফ্রিকা-জিম্বাবুয়ের মধ্যে ম্যাচটি অষ্টম দিবা-রাত্রির টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকায় এই প্রথম ফ্ল্যাড লাইটের আলোয় টেস্ট খেলা হচ্ছে। এর আগে চারটি দিবা-রাত্রির টেস্ট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়।