শুদ্ধাচার পুরষ্কারে ভূষিত হলেন বরগুনা জেলা প্রশাসক

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

পেশাগত দায়িত্বপালনের পাশাপাশি বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য শুদ্ধাচার পুরস্কার-২০২০ অর্জন করেছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। মঙ্গলবার বিকেলে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের এক অফিস আদেশে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করা হয়।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২২ জুন বরগুনার জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন মোস্তাইন বিল্লাহ। গত মাসের ২২ জুন বরগুনায় যোগদানের এক বছর পূর্ণ হয়েছে তাঁর। এই এক বছরের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশাত্মবোধের তাগিদে বরগুনার উন্নয়নে পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি বহুমুখী সৃজনশীল ও কার্যকরী উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন তিনি।

বরগুনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা জেলার ইকো ট্যুরিজমকে বিকশিত করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক তালতলী উপজেলার শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব এবং দেশের বৃহত্তম ইলিশ উৎসব উদযাপনের পাশাপাশি সৈকত সৌন্দর্যের অপরূপ বরগুনা জেলাকে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে ভিডিওচিত্রসহ নির্মাণ করেন বরগুনা জেলার ব্র্যান্ডিং সং। এরই মধ্যে যা সারা দেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

 

একই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জেলার সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যমণ্ডিত বিভিন্ন স্থানের ছবি সংবলিত একনজরে একটি ফটোপ্রাচীর বানিয়েছেন মোস্তাইন বিল্লাহ। প্রকাশ করেছেন বরগুনা জেলা ট্যুরিজম অ্যালবাম। মহাপ্রলয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিডরে নিহত সহস্র মানুষের স্মৃতিতে তিনি নির্মাণ করেছেন ‘সিডর স্মৃতিস্তম্ভ’। মুজিববর্ষ উপলক্ষে নানামুখী কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরতে স্থানীয় ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধার সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা’ নামের একটি বই প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

এ ছাড়া জেলা নিজ কার্যালয়ের পাশেই ‘মুজিব অঙ্গন’ বানিয়ে সেখানে মোস্তাইন বিল্লাহ বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল স্থাপন করেছেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের একাংশে স্থাপন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান সংরক্ষণসহ স্থানীয় শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ‘মুজিববর্ষে মুজিবকে জানুন’- এমন একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেন তিনি।

 

জেলার প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য ‘নন্দিনী হাইজিন কর্নার’ নামের একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক। তথ্যপ্রযুক্তির অজানা বিষয়গুলো তুলে ধরতে তিনি অনলাইনভিত্তিক পেজ ‘ডিজিটাল অনলাইন প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি করেন। বরগুনার মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে কারাতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেন তিনি।

 

মোস্তাইন বিল্লাহর নেতৃত্বে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও আম্পানের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সাফল্যের সঙ্গে নানামুখী কার্যকরী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন,

 

‘এ স্বীকৃতির জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’ একই সঙ্গে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোস্তাইন বিল্লাহ আরো বলেন, ‘এটি আমার একার কৃতিত্ব নয়, এটি পুরো বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাজের স্বীকৃতি। এ ধরনের স্বীকৃতি আগামী দিনে আমাদের কাজ করতে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করবে।’