শিশুদের মাঝে রাসেলকে খোঁজেন প্রধানমন্ত্রী

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

বাংলাদেশের সব শিশুর মাঝে শেখ রাসেলকে খুঁজে ফেরার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে দেশের সকল শিশু এগিয়ে আসুক।’

শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস (১৮ অক্টোবর) উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গভীর ভালোবাসা ও পরম মমতায় রাসেলকে স্মরণ এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ রাসেল আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু আছে তার পবিত্র স্মৃতি। বাংলাদেশে সকল শিশুর মধ্যে আজও আমি রাসেলকে খুঁজে ফিরি। এই শিশুদের রাসেলের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। এমন এক উজ্জ্বল শিশুর সত্তা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশের শিশুরা বড় হোক। খুনিদের বিরুদ্ধে তারা তীব্র ঘৃণা বর্ষণ করুক।’

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জীবন ও কর্ম শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে তার জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয়ভাবে দ্বিতীয় বারের মতো পালিতব্য ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২২’ এর প্রতিপাদ্য ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’ যথার্থ হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী মনে করেন।

প্রধানমন্ত্রী জানান, শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসায় জন্মগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অত্যন্ত প্রিয় লেখক ছিলেন খ্যাতনামা দার্শনিক ও নোবেলজয়ী বার্ট্রান্ড রাসেল। জাতির পিতা বার্ট্রান্ড রাসেলের বই পড়ে বঙ্গমাতাকে ব্যাখ্যা করে শোনাতেন। তাই, বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গমাতা তাদের ছোট ছেলের নাম রেখেছিলেন রাসেল।

রাসেল নামটি শুনলেই প্রথমে যে ছবিটি সামনে আসে, তা হলো—হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণচঞ্চল এক ছোট্ট শিশুর দুরন্তপণা, যে শিশুর চোখগুলো হাসি-আনন্দে ভরপুর। মাথাভর্তি অগোছালো চুলের সুন্দর একটি মুখাবয়ব, যে মুখাবয়ব ভালোবাসা ও মায়ায় মাখা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোমলমতি শিশু রাসেলকে আমরা হারিয়েছি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ইতিহাসের এক নির্মম, জঘন্য ও বিভীষিকাময় রাতে। স্বাধীনতাবিরোধী, ষড়যন্ত্রকারী ও বিশ্বাসঘাতকদের হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের ১৮ জন সদস্য শহীদ হন ওই কালরাতে। সেদিন ছোট্ট শিশু রাসেলও খুনিদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। রাসেল তো বাঁচতে চেয়েছিল। বাঁচার জন্য ঘাতকদের কাছে আকুতি জানিয়েছিল, মায়ের কাছে যাওয়ার কথা বলেছিল। মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ঘাতকরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভীষিকাময় সেই রাতের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত এখনও গভীর শোকের সঙ্গে স্মরণ করি। এখনও ভাবি, কারো বিরুদ্ধে শত্রুতা থাকতেই পারে, কিন্তু সেই ক্ষোভ একজন কোমলমতি শিশুকে কেন কেড়ে নেবে? এই শিশু কী দোষ করেছিল? সে তো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে কেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হবে? এতসব স্মৃতি স্মরণ করতে কষ্ট হয়। চোখ ভিজে ওঠে, বুকে পাথর বেঁধে সেইসব স্মৃতির সাগরে ডুব দেই। কারণ, সেদিন ঘাতকের বুলেট যে কোমলমতি শিশুটির প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, সে ছিল নির্দোষ-নিষ্পাপ। মহানুভবতা ও ব্যবহারে সে ছিল অমায়িক। রাসেল যদি বেঁচে থাকত, তাহলে হয়ত মহানুভব, দূরদর্শী ও আদর্শ নেতা আজ আমরা পেতাম, যাকে নিয়ে দেশ ও জাতি গর্ব করতে পারত।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।