শিশুদের পাঠাভ্যাস বাড়াতে হাতেখড়ির “উপকূল পাঠাগার”

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

পিরোজপুর প্রতিনিধি: মঠবাড়িয়ার বেতমোর গ্রামে হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের অভিনব উদ্যোগে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া সদর থেকে ফসলের মাঠের বুক চিরে আকাঁ বাকা রাস্তা চলে গেছে বেতমোর গ্রামে। পিচঢালা পথের দু’পাশে গাছের সারি।

বাতাসে যেন ছড়িয়ে পড়ছে সবুজের ঘ্রাণ। গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের বইপড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হাতেখড়ি ফাউণ্ডেশন গড়ে তোলেন “উপকূল পাঠাগার”।

অন্ধকার দূর করে আলো ছড়াচ্ছে দুর্গম এলাকায়, হাতেখড়ির উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শিশুদের জন্য ‘উপকূল পাঠাগার’টি।

জ্ঞানার্জনে বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। আর এই বইপড়া নিয়েই আমাদের যত গড়িমসি।

 তাইতো,আনন্দময় পরিবেশে বই পড়তে শিশুরা যেন গড়িমসি না করে তার বিহিত ব্যবস্থা করার  জন্য হাতেখড়ির উপকূল পাঠাগার।

শিশুরা যাতে আনন্দের সঙ্গে শিক্ষা অর্জন করতে পারে সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয় উপকূল পাঠাগারটি।

৪-১৪ বছর বয়সী শিশুদের জন্য পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, টেক্সট বইয়ের পাশাপাশি সৃজনশীল শিক্ষার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, এবং ‘পড়াই আনন্দ’ এই বার্তা সব শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার মহান উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে পাঠাগারটি।

বই পড়ার পাশাপাশি শিশুরা সেখানে শিক্ষামূলক খেলনা দিয়ে খেলাধুলা, শিক্ষামূলক ভিডিও দেখা, কম্পিউটার চালনাসহ করতে পারবে ইন্টারনেট ব্যবহারের জ্ঞানার্জন।

এর ফলে শিশুরা শুধু বই পড়াই নয়, পাবে কারিগরি শিক্ষায়ও দক্ষ হওয়ার সুযোগ।

অনেক বাচ্চা রয়েছে, যারা বই পড়তে ভালোবাসে। তবে নিয়মিত বই কিনে পড়ার সামর্থ নেই, তাদের জন্য সহজে বই পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

পাঠাগারটি শুধু বই পড়াকে ঘিরে নয়, থাকবে বিনোদনের নানা আয়োজন। পাঠাগারটি শিশুদের মধ্যে পাঠাভ্যাস তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ করবে, যা তাদের ভবিষ্যৎ আলোকিত করবে বলে বিশ্বাস করেন হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের সদস্যরা।

সংগঠনের সদস্যরা বলেন, আমরা আপাতত কিছু সংখক বই দিয়ে শুরু করছি আস্তে আস্তে আমরা আমাদের বইয়ের সংখ্যা বাড়াবো।

আমাদের পাঠাগার দিয়ে বই বাড়িতে নিয়ে পড়তে পারে শিশু কিশোররা।সপ্তাহে ৪দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পাঠাগারটি।এখানে রয়েছে শিশুদের গল্পের বই,ছড়ার বইসহ শিশুদের জন্য অনেক বই।

সংগঠনটির চেয়ারম্যান মোঃ রুবেল মিয়া বলেন, পাঠাগার থেকে শিশুরা  শিশুতোষ গল্পের বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।

তিনি মানসম্মত শিক্ষার উন্নয়নে জীবনমান সহায়ক শিক্ষা প্রসারে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহবান জানান।

আজ ২৩.০৮.২০২১ ইং তারিখ রোজ সোমবার পাঠাগারটির শুভ উদ্ভোধন করেন কালের কণ্ঠের আঞ্চলিক প্রতিনিধি ও আলোকচিত্রী  দেবদাস মজুমদার।

তিনি বলেন উপকূল পাঠাগারটি হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের একটি অনন্য উদ্যোগ। হাতে খড়ি ফাউন্ডেশন এরকম উন্নয়নমূলক নানা কার্যক্রম করে আসছে বিগত কয়েক বছর ধরে। আমি হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের সাফল্যময় সমৃদ্ধি কামনা করছি।

হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সুমন চন্দ্র মিস্ত্রি সজিব বলেন হাতে খড়ি ফাউন্ডেশন দক্ষিণ জনপদের একটি স্বনামধন্য সেচ্ছাসেবী সংগঠন।

২০১৮ সালের ১৭ই মার্চ শুরুর পর থেকে দক্ষিণ উপকূলের জেলে শিশুদের কল্যাণে কাজ করার পাশাপাশি আমরা কাজ করছি নানা রকম সামাজিক উন্নয়নে। আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

সামাজিক কাজে অবদান রাখায় ২০২০ সালে হাতে খড়ি ফাউন্ডেশন অর্জন করে জাতীয় পুরস্কার ‘জয় বাংলা ইয়ুথ এওয়ার্ড’-২০২০।