বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানায় কর্মরত কর্মকর্তাদের নিয়ে “শিশু আইন -২০১৩” বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগীতায়, অপরাজেয় বাংলাদেশ এর আয়োজন ও ইউনিসেফ এর অর্থায়নে আজ বুধবার ২ ডিসেম্বর পুলিশ অফিসার্স মেসে কর্মশালটি অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মশালার শুভ উদ্বোধন করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম, উপ-পুলিশ কমিশনার সদর-দপ্তর আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ্, বরিশাল চীফ ইউনিসেফ এ এইচ তৌফিক আহমেদ।
কর্মশালায় মুখ্য সমন্বয়ক, সহকারী পুলিশ কমিশনার কোতোয়ালি মডেল থানা মোঃ রাসেল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ফেরদৌসী সুলতানা প্রকল্প সমন্বয়কারী, অপরাজেয়-বাংলাদেশ।
প্রধান অতিথি বলেন, মানবাধিকার সমুন্নত রেখে শিশুদের প্রতি সহনশীল হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শ ধারণ করে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসে অবতীর্ণ হয়েছি।
বঙ্গবন্ধু একজন শিশু বান্ধব নেতা ছিলেন, তাঁর আদর্শে, মুক্তি যুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শিশুদের অপরাধী না ভেবে শিশু অধিকার সমুন্নত রেখে কাজ করার মাধ্যমে তাঁর প্রতি, দেশের জন্য আত্মত্যাগী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে।
বঙ্গবন্ধু বলেছেন, এই দেশের পুলিশ হবে জনবান্ধব জনগণের পুলিশ। এই স্লোগানকে সামনে রেখে এই কর্মশালায় আন্তরিক অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ হয়ে মাঠপর্যায়ে, থানা পর্যায়ে নারী শিশু সহ সবাইকে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বদান্যতায় ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রতিষ্ঠা হয়। তিনি শিশু অধিকার বাস্তবায়নে অত্যন্ত যত্নশীল ছিলেন, শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন । এইজন্য বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিনে শিশু দিবস উদযাপিত হয়।
তিনি বলেন, সব কিছুরই অধিকার সংরক্ষণের আলাদা জায়গা রয়েছে। শিশু অধিকার বাস্তবায়নে শিশুদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে, লক্ষ রাখতে হবে এখতিয়ার খাটাতে গিয়ে যেন সীমালংঘন না হয়।
একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ অন্যায় করলে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়, শিশু অপরাধের বিষয়ে তা নেয়া যায় না, অধিক গুরুত্বের সাথে দেখা হয় । কারণ, শিশুদের সংশোধনের অফুরান সময় থাকে।
নিরাপদ পরিবেশ রক্ষার্থে অপরাধ ভিন্ন প্রকৃতির হলে বা সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ হলে তা দমনে নিদর্শনস্বরূপ শিশু অধিকার সমুন্নত রেখে তাকে শোধরানোর বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে “শিশু আইন -২০১৩” বাস্তবায়ন করা সম্ভব মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উক্ত কর্মশালায় গেস্ট স্পিকার হিসেবে গ্রেফতার, তদন্ত, বিকল্প পন্থা এবং জামিন সহ শিশু সংক্রান্ত বিশেষ অপরাধ সমূহের দন্ড শীর্ষক আলোচনা রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় শয়তান অজ্ঞতা। শিশুরা আগামীর ভবিষ্যৎ, সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে আইন জেনে শিশুদের সাথে আইনসম্মত আচরণ করতে হবে। যারা আইন ও দায়িত্ব বুঝে নির্ভুল কাজ করেন, কেবল তাদেরই পেশাদার বলা হয়।
আইন না জানলে শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবো, আমাদের ভালো অর্জনগুলো ধুলোয় মিশে যেতে পারে। তাই “শিশু আইন -২০১৩” বিষয়ক কর্মশালা থেকে সাম্যক জ্ঞান নিয়ে শিশুদের প্রতি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গেস্ট স্পিকার হিসেবে, শিশু আইন -২০১৩, শিশু বিষয়ক ডেস্ক ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার শীর্ষক আলোচনা রাখেন, উপ-পুলিশ কমিশনার সদর-দপ্তর আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ্।
শিশু অধিকার, শিশুর প্রতি আচরণ ও প্রবেশন কর্মকর্তার দায়িত্ব কর্তব্য শীর্ষক আলোচনা রাখেন জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা, সাজ্জাদ পারভেজ।
শিশু আদালত ও তার কার্যপ্রণালী, বিকল্প পরিচর্যা শীর্ষক আলোচনা রাখেন, চাইল্ড প্রটেকশন অফিসার, ইউনিসেফ জামিল হাসান।
এ-সময় উপস্থিত ছিলেন, অপরাজেয়-বাংলাদেশ, ইউনিসেফ এর অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।