নিরাপদ সড়কের দাবিতে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর ক্রমাগত সহিংসতা চাপিয়ে দেয়ায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ ছাড়া, পেশাগত দায়িত্বপালনে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নির্লজ্জ হামলায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এরূপ আত্মঘাতী আচরণ পরিহার করে সরকারের প্রতি তথ্য ও মত প্রকাশের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
রোববার এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সংস্থাটি। এতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নিরাপদ সড়ক ও ন্যায় বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এহেন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ দাবি আদায়ের পরিবেশ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। অতএব, প্রজন্মের ব্যর্থতার চ্যালেঞ্জ উত্তরণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সরকার তথা রাষ্ট্রের অঙ্গীকারের সহায়ক মাত্র। এ ক্ষেত্রে, তাদের ওপর পরিকল্পিত হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সরকারের বাধ্য-বাধকতারই অংশ।
ড. জামান বলেন, চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকারের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের মনে আস্থা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হওয়া এই আন্দোলন অব্যাহত থাকার অন্যতম কারণ। এ ক্ষেত্রে, সরকারকে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শীতার সঙ্গে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো ধরনের বল প্রয়োগ ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থেকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্টজনদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত গাফিলতিপ্রসূত ব্যর্থতা, আইনের প্রয়োগের অভাব, সুশাসনের ঘাটতি এবং উচ্চপর্যায়ের সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন অনিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ পরিবহন খাতের অরাজকতার অবসানে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর আলোকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘোষণা দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে পরিবহন খাতে শ্রমিক-মালিক সংগঠনের নেতাদের একইসঙ্গে মন্ত্রিত্বের অবস্থানপ্রসূত স্বার্থের দ্বন্দ্বের অবসান করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পরিবহন খাতে চলমান সংকট মোকাবেলা ও এ খাতে বাস্তব ইতিবাচক অগ্রগতির জন্য এই স্বার্থের দ্বন্দ্বের অবসানের বিকল্প নেই। একইসঙ্গে, প্রস্তাবিত খসড়া আইন ও পরিবহন নীতিমালা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।