শান্ত-ইমনের সেঞ্চুরি নয়, পার্থক্য গড়ে দিল একটি ওভার!

:
: ৪ years ago

পুরো আসরে যা হয়নি, একদিনে এক ম্যাচে তাই হলো। সেঞ্চুরি ছিল না, সেঞ্চুরি হলো। সেটাও আবার দুই ইনিংসে দুই ব্যাটসম্যানের। দলীয় ২০০ রান ওঠেনি আগে। তাও উঠলো।

শান্তর ৫৫ বলে ১০৯ আর তরুণ আনিসুল ইসলাম ইমনের ঝড়ো গতির ৩৯ বলে ৬৯ রানের ওপর ভর করে মিনিস্টার রাজশাহীর স্কোর গিয়ে ঠেকলো ২২০‘এ। সে অবধি ঐ পাহাড়সমান স্কোর টপকে আরও বড়সড় চমকের জন্ম দিল তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল।

যে দলের আগের কয়েক ম্যাচে দেড়শ করতে নাভিশ্বাস উঠেছে, সেই বরিশালের তরুণ পারভেজ হোসেন ইমন দুঃসাহসী আর কঠিন মিশনে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন সামনে থেকে। অধিনায়ক তামিম (৩৭ বলে ৫৩) আর সাইফ হাসান (১৫ বলে ২৭) ঝড়ো সূচনার পর তিন নম্বরে নেমে ক্যারিয়ার সেরা শতক উপহার দিয়ে বরিশালকে জিতিয়েছেন পারভেজ ইমন (২৩৮.০৯ স্ট্রাইকরেটে ৪২ বলে অপরাজিত ১০০)।

চট্টগ্রামের ১৯ বছর বয়সী এ সম্ভাবনাময় তরুণের চওড়া উইলোর ওপর ভর করে রাজশাহীর ২২০ রানের পাহাড়সমান স্কোর টপকে এক অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিয়েছে বরিশাল। ঘটনা আর চমকের এটাই শেষ নয়। আরও আছে।

ওদিকে এবারের আসরে আগে হ্যাটট্রিক হয়নি। আজ ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে সেই হ্যাটট্রিকের দেখাও মিলল। রাজশাহী ইনিংসের শেষ ওভারে হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেটের পতন ঘটিয়ে খেলাটিকে স্মরণীয় সাফল্যে রাঙিয়ে রেখেছেন বরিশাল পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি।

মোদ্দা কথা, অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটেছে আজ শের বাংলায়। কিন্তু এতগুলো ব্যক্তিগত ও দলগত সাফল্যের ম্যাচে সবার অলক্ষ্যে ঘটে গেছে কিছু ব্যর্থতার ঘটনাও। দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত আর আনিসুল ইসলাম ইমনের উদ্বোধনী জুটিতে ১৩১ রান (১২.২ ওভারে) তোলার পর রাজশাহীর স্কোর ২২০ ‘এর ঘরে পৌঁছানোয় হয়তো তা নিয়ে কথা হয়নি। তবে রাজশাহী হারার পর নিশ্চয়ই টিম মিটিংয়ে এসব নিয়ে কথা হবে।

রাজশাহী ইনিংস ২২০ এ গিয়ে ঠেকলোও ঐ বিশাল স্কোর কার্ডে অধিনায়ক শান্ত আর তরুণ আনিসুল ইসলাম ইমন ছাড়া আর দুজন মাত্র ব্যাটসম্যান দুই অংকে পা রেখেছেন। তারা হলেন-রনি তালুকদার (১২ বলে ১৮) ও নুরুল হাসান সোহান (৯ বলে ১২)। এই চারজন ছাড়া বাকি ৫ জন মিলে করেছেন মোটে ১০। দুজন আউট হয়েছেন শূন্য রানে। এর মধ্যে কামরুল ইসলাম রাব্বির করা ইনিংসে শেষ ওভারে আউট হয়েছেন অধিনায়ক শান্ত, নুরুল হাসান সোহান, অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের মত পরিণত ও সুপ্রতিষ্ঠিত পারফরমাররা।

রাজশাহী ইনিংস শেষে ঐ চারজনের আউট হওয়ার ঘটনাকে বড় মনে হয়নি। তা নিয়ে তেমন কথাও হয়নি। বরং শান্তর সেঞ্চুরি, তরুণ আনিসুল ইমনের অসাধারণ ব্যাটিং, কামরুল ইমলাম রাব্বির শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক আর মিনিস্টার রাজশাহীর ২২০ রানের হিমালয় সমান স্কোর গড়া নিয়েই যত কথা হয়েছে।

কিন্তু খেলা শেষে পোস্টমর্টেমে বেরিয়ে এসেছে রাজশাহীর মিডল ও লেট অর্ডারের চরম ব্যর্থতার কথাও। রাজশাহীর ড্রেসিংরুম আর ডাগ আউটে বারবার বলাবলি হচ্ছিল, ইশ, শেষ ওভারে ৪ জনের আউট হওয়াটা কত ক্ষতিই না করেছে! চার চারটি ডট বলও হয়েছে। যার দুটিতে একটি করে চার ও ছক্কা আসলেও হয়তো খেলার ফল ভিন্ন হতে পারতো।