শরীফ উদ্দিনকে নিয়ে গণমাধ্যমের খবরকে ‘একতরফা’ বললেন দুদক সচিব

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

চাকরিচ্যুত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে নিয়ে গণমাধ্যমে একতরফা সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির সচিব মাহবুব হোসেন। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারিতে) এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

দুদক সচিব বলেন, কর্মচারীদের অসদাচরণ ও অন্যান্য অপরাধের জন্য শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধি রয়েছে। দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪(২) বিধিতে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই অপসারণের বিধান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি অনুযায়ী দুদক ছাড়াও দেশের অন্য বহু দপ্তরে এই রকম আইন ও বিধি বিদ্যমান। সেসব দপ্তর/প্রতিষ্ঠান শৃঙ্খলার স্বার্থে প্রয়োজনে তা প্রয়োগ করে।

তিনি বলেন, আলোচ্য ৫৪(২) বিধি অত্যন্ত সীমিত ও অপরিহার্য ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। কমিশন এও মনে করে যে, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে শান্তি প্রয়োগ করা উচিত। কিন্তু কমিশনের শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে শরীফ উদ্দিনকে ৫৪ (২) বিধিমতে অপসারণ করা হয়েছে। কমিশনের সভায় বিস্তারিত আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

মাহবুব হোসেন বলেন, শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের আদেশ জারির পর থেকেই বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বিষয়টি প্রচারিত হচ্ছে। মূলত একতরফা তথ্যের ভিত্তিতেই এই সংবাদসমূহ প্রচারিত হচ্ছে, যা প্রকৃত ঘটনার বিপরীত। অপসারণকৃত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন দায়িত্ব পালন কালে, যে কোনো অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। গুরুত্বপূর্ণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ যাই হোক না কেন, দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সব কর্মচারীই নির্ভয়ে এবং নির্মোহভাবে দায়িত্বপালন করে থাকেন। কিন্তু শরীফ উদ্দিনের মতো কোনো অজুহাত তারা উত্থাপন করেন না।

 

দুদক সচিব বলেন, প্রকৃত অপরাধ ও কর্মের দায় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শরীফ উদ্দিন কিছু মামলাকে গুরুত্বপূর্ণ মামলা বলে প্রচার করে ওই মামলা/অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়েছেন। তাই প্রভাবশালীদের চাপে তাকে
অন্যায়ভাবে অপসারণ করা হয়েছে মর্মে তিনি দাবি করেছেন এবং মিডিয়ায় তাই প্রচার করা হয়েছে, যা প্রকৃত ঘটনা নয়।

তিনি বলেন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের কিছু মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুর্নীতি উদঘাটনের কারণে তাদের প্রভাবে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে এটা মোটেও সত্য নয়। বাস্তবতা বিবেচনায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কর্মরত জেলা পর্যায়ের ব্যক্তিদের আর কতটুকুই বা প্রভাব থাকতে পারে! কমিশনের প্রায় সব অনুসন্ধান ও তদন্তকারী কর্মচারী চট্টগ্রাম বা কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট মামলায় উল্লিখিত অভিযুক্ত বা আসামিদের অপেক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ উঁচু পদ-পদবির ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে বিচারের পর তাদের সাজাও হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করেননি। তাদের কারণে কমিশনকে এভাবে বিব্রত হতে হয় না।

দুদক সচিব আরও বলেন, আপনাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো প্রভাব আমলে নেয় না এবং প্রভাবিত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণও করে না।