শবরীমালায় নারীর প্রবেশ নিয়ে উত্তাল কেরালা, ৮০১ মামলায় গ্রেপ্তার ১৩৬৯

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

ভারতের কেরালা রাজ্যের শবরীমালা মন্দিরে তৃতীয় নারী প্রবেশ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর নিশ্চিত করেছে। রাজ্য পুলিশ বলছে, শ্রীলঙ্কার ওই নাগরিক মন্দিরে ঢুকেছেন। তবে শশীকলা নামের ওই নারীর দাবি, তিনি মন্দিরে ঢুকলেও পুলিশের বাধার কারণে আরাধ্য দেবতার দর্শন পাননি।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, শশীকলা নামের শ্রীলঙ্কার সেই নাগরিকের বয়স ৪৬ বছর। শবরীমালা মন্দিরে এত দিন ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী ঋতুমতী কোনো নারী প্রবেশ করতে পারতেন না। তবে সর্বোচ্চ আদালত সম্প্রতি তা খারিজ করে দিয়েছেন। এরপরই গত বুধবার ভোরে মধ্যবয়সী ঋতুমতী দুই নারী প্রশাসনের সহায়তায় শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করে প্রার্থনা সারেন। তার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ ও সহিংসতা। এই বিক্ষোভ আজ শুক্রবারও চলছে।

লাইভ মিন্টের খবরে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত পুলিশ ১৩৬৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। মোট মামলা হয়েছে ৮০১টি। অন্যদিকে গত বুধবার শবরীমালা মন্দিরে ঢোকা দুই নারীর নাম বিন্দু ও কনকদূর্গা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মন্দিরে ঢোকার সময় সেখানকার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো বাধা পাননি।

দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়েছে, শশীকলা বৃহস্পতিবার রাতে মন্দিরে ঢোকেন। সেখানকার স্থানীয় পুলিশ বলছে, শশীকলাকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি এবং তিনি প্রার্থনা করতে পেরেছেন। তবে শশীকলা বলছেন, পুলিশ তাঁকে বাধা দিয়েছেন এবং তিনি ঢুকেছেন মন্দিরের নিয়ম মেনেই। শ্রীলঙ্কার এই নাগরিকের দাবি, তিনি ঋতুমতী নন এবং এটি নিশ্চিত করতে তাঁর কাছে চিকিৎসকদের সনদপত্রও ছিল।

১৯৯১ সালে দেওয়া কেরালা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ১০ থেকে ৫০ বছরের ঋতুমতী নারী ওই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না। সন্দেহজনক নারীদের মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে বয়সের প্রমাণপত্র দাখিল করতে হয়। এই প্রথার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ আদালত তার রায়ে সেই বৈষম্য দূর করেন। সেই থেকে একাধিকবার মন্দির দর্শনে গেলেও কোনো ঋতুমতী নারী সফল হননি। গত বুধবার ভোরে প্রথমবারের মতো দুই নারী সেই প্রথা ভাঙেন।

এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেরালায় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বামপন্থীদের সঙ্গে বিজেপি সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘসহ (আরএসএস) বিভিন্ন ডানপন্থী সংগঠন এই সংঘাতে ইন্ধন জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বৈষম্যহীনতার পক্ষে গলা ফাটানো রাজ্য কংগ্রেসও।

অবশ্য প্রবল বিক্ষোভের মুখেও অটল আছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি বলেছেন, মন্দিরে নারী প্রবেশে সহায়তা করে সরকার তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেছে। এই দায়িত্ব পালনে সরকার বদ্ধপরিকর