মালয়েশিয়ার ১৪তম সাধারণ নির্বাচনে অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছেন মাহাথির মোহাম্মদ। বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া সময় বিকেল ৫টায় নেগারা ইস্তানায় (রাজ প্রাসাদ) অবস্থান করেন। মালয়েশিয়া সময় রাত সাড়ে ৯টায় রাজা সুলতান মোহাম্মদ ভি শপথ পাঠ করান।
৯ মে বুধবার রাতে মাহাথিরের দলকে জয়ী ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এদিকে নির্বাচনে মাহাথিরের জয়ে দেশটিতে দু’দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার চিফ সেক্রেটারি আলী হামসা ১০ ও ১১ মে অর্থাৎ বৃহস্পতি ও শুক্রবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। ছুটি আইন-১৯৫১ এর ৮ ধারা অনুযায়ী এই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচনে ২২২ আসনের মধ্যে মাহাথির মোহাম্মদের পাকাতান হারাপান ১২১ আসনে জয় পায়। অন্যদিকে দেশটির ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বারিসান ন্যাশনাল ৮৮ আসনে জয় পেয়েছে।
মাহাথিরের এ জয় নানা কারণেই অবিস্মরণীয়। যে বারিসান ন্যাশনাল জোটকে হারিয়ে তিনি এ নির্বাচনে জয়ী হলেন, এক সময় এই জোট থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ২২ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহাথির।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে মাহাথির ৭ম প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বল এক নাম। তার হাত ধরেই আধুনিক মালয়েশিয়ার গোড়াপত্তন হয়। কিন্তু ৯২ বছর বয়সে রাজনীতিতে নেমে ৬০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা একটি জোটকে পরাজিত করা মোটেও সহজ ছিল না।
মালয়েশিয়ার ১৪তম এ সাধারণ নির্বাচনকে গড়পড়তা হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। নির্বাচনে নাজিব রাজাকের বিজয়ও নিশ্চিত দেখতে পাচ্ছিলেন সবাই। কিন্তু মাহাথির নির্বাচনে নামার ঘোষণা দেয়ার পরই পাল্টে যেতে থাকে ভোটের হিসাব। নির্বাচনী মাঠে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
তারপরও ‘বুড়ো’ মাহাথিরকে নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ ছিল। কিন্তু মাহাথির তাদের ভুল প্রমাণ করেছেন। নির্বাচনী প্রচারের সময় মাহাথির বারবার বলেছেন, ‘মালয়েশিয়ানরা পরিবর্তনে ভয় পায়।’ তবে জয়ী হওয়ার পরপরই মাহাথির বলেছেন, তিনি কোনো প্রতিশোধ নিতে চান না, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান।