প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করায় বখাটের ছুরিকাঘাতে আহত পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাসার বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তুলি আক্তার (১৪)বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে এখনো পুরোপুরি শংকামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
তাকে হাসপাতালের ‘পোস্ট অপারেটিভ’ ওয়ার্ডে রেখেই চিকিৎসকদের সার্বক্ষনিক তদরকি করছেন। এদিকে রোববার (০২ সেপ্টেম্বর) তুলির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইব্রাহিম চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ছুরির আঘাতে তুলির খাদ্যনালীতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়ে গেছে। কয়েকটি রক্তনালী কাটা পড়েছে। এসব ক্ষত স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।
অপরদিকে দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় তুলির চিকিৎসার জন্য কলাপাড়া পৌরশহর এবং তার নিজ ইউনিয়নে সচেতন মহল প্রতিনিধিরা আর্থিক সহায়তা সংগ্রহ করছেন। সংগ্রহীত অর্থ তুলির পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম শিকদার এর (বিকাশ ০১৭২১০৬০৭৭৪ নম্বরে) কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তুলির চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তিতে যেন কোন প্রকার অনিয়ম বা প্রতারণা যাতে না ঘটে সেজন্য কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সংবাদ কর্মীরা তদরকী করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহায়তা দাতাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে।
এদিকে তুলি ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে পুলিশের উদ্যোগে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেনীর ও পেশার মানুষকে নিয়ে ধুলাসার আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজ মিলনায়তনে সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তুলি ওপর হামলার ঘটনার বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত বেশকিছু আলামতও জব্দ করা হয়েছে। সহযোগী রনি গাজীকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ধুলাসার ইউনিয়নের পশ্চিম ধুলাসার গ্রামের দিনমজুর নিজাম উদ্দিন হাওলাদারের চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় মেয়ে তুলি আক্তারকে দীর্ঘদিন ধরে একই ইউনিয়নের পূর্বধুলাসার গ্রামের দিনমজুর সোলায়মান মিয়ার ছেলে মো. নাঈম হোসেন প্রেম প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। প্রেমে সাড়া না দেওয়ায় গত শনিবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিদ্যালয় চত্বরে বসে অপর সহযোগী ধুলাসারের সোহাগ গাজীর ছেলে রনি গাজীকে সঙ্গে নিয়ে তুলির উপর সশস্ত্র হামলা চালায়। তুলির অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ দেখে সহযোগী রনি গাজী হোন্ডাসহ পালিয়ে যায়। তাৎক্ষনিক সহপাঠীরা ঘাতক নাঈমকে পাকড়াও করে পুলিশে দেয়। পরে তুলিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে কলাপাড়া হাসপাতালে পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।