লেখক মুশতাকের মৃত্যুতে ১৩ রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ, সুষ্ঠু তদন্ত দাবি

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় শোক ও উদ্বেগ জানিয়েছেন অরগানাইজেশস ফর ইকোনমিক কোপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) ১৩টি দেশের ঢাকার রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার।

তারা এ ঘটনার দ্রুত, স্বচ্ছ, স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান তারা।

বিবৃতে তারা বলেন, গত বছরের ৫ মে থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) ধারায় বিচারপূর্ব আটক অবস্থায় ছিলেন মুশতাক আহমেদ। আমরা জেনেছি, বেশ কয়েকবার তাকে জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে এবং আটক থাকা অবস্থায় তার প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে তা নিয়ে উদ্বেগ আছে। আমরা তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর একটি দ্রুত, স্বচ্ছ, স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে আহ্বান জানাচ্ছি।

তারা আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারাগুলো ও এর প্রয়োগে আমাদের সরকারগুলোর ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানের প্রতি বাধ্যবাধকতার সঙ্গে এ আইনের সামঞ্জস্য সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অব্যাহতভাবে আলোচনা চালিয়ে যাবো।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, ডেনমার্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ মে কার্টুনিস্ট কিশোরকে কাকরাইল ও লেখক মুশতাক আহমেদকে লালমাটিয়ার বাসা থেকে আটক করে র‌্যাবের একটি দল। এরপর তাদের রমনা থানায় হস্তান্তর করা হয়। ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগে রমনা থানায় তাদের দুই জনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছিল, কার্টুনিস্ট কিশোর তার ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন। আর মুশতাক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে মারা যান মুশতাক আহমেদ। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।