লিডারশিপের জন্য নারীর প্রস্তুতি

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

আমাদের অনেকেই মনের মধ্যে একটি ভুল ধারণা লালন করি, তা হলো লিডার বা দলনেতা কোনো একজন পুরুষই হবেন। কিন্তু না বর্তমান সময়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে।

পুরুষের পাশাপাশি নারীও এখন তার অধিকার আদায়ের জন্য সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর এই অগ্রযাত্রা দিনে পর দিন তাকে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে। তাই ঘরে ও কর্মক্ষেত্রে সফল হচ্ছেন অনেক নারী।

বেশির ভাগ নারীই চান তিনি লিডার, দলনেতা আলোকিত মানুষ হন। কিন্তু আপনি বুঝে উঠতে পারেন না আপনাকে কী করতে হবে।

অনেক প্রতিষ্ঠানে পুরুষ এবং নারী কর্মীর সমান মেধা থাকা সত্ত্বেও নারীদের কম সুযোগ প্রদানের কারণে নিজেদের যোগ্যতার সঠিক প্রমাণ তারা করতে পারছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানই নারীদের নেতৃত্ব প্রদানের কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে না অথচ নারীদের এই সুযোগ তাদের প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারত।

তবে বিভিন্ন গবেষণায় এটি সফলভাবে প্রমাণিত হয়েছে নেতৃত্ব দানকারী সব গুণাবলি অর্জন করেও একজন সফল দলপতি হওয়া সম্ভব। তাই হীনমন্যতা না ভুগে কিছু বিষয় যদি আপনি মেনে চলেন তবে অবশ্যই আপনি হবেন সফল নারীদের একজন।

আসুন জেনে নেই কীভাবে একজন নারী লিডারশিপ অর্জন করবেন।

জ্ঞানের বৃদ্ধি

আপনি যদি লিডারশিপ অর্জন করতে চান ও সফল মানুষ হতে চান তবে অবশ্যই নিজেকে সময় দিন। যে কাজ করলে আপনার উন্নতি হবে, তা করুন আর নিজস্ব উন্নয়ন সম্ভব নয় এমন কাজ বর্জন করুন। ভালো বই পড়ুন, ভালো মুভি দেখুন, ভালো জায়গায় বেড়ান এককথায় যা করলে আপনার ব্যক্তিজ্ঞানের পরিসীমা বৃদ্ধি পাবে সেদিকে সময় ব্যয় করুন।

মস্তিষ্ককে সময় দিন

আপনার মস্তিষ্ককে সৃজনশীল ভাবনায় কাজে লাগান। আপনি যদি দিনের পুরো সময় দুশ্চিন্তা, কষ্ট বা অন্য কাজে ব্যয় করেন তাহলে নতুন কোন সৃজনশীল ভাবনার জন্য আপনার মস্তিষ্ক সময় পাবে না। তাই দিনের কিছু সময় নতুন ভাবনার পেছনে ব্যয় করুন।

অতীতের শিক্ষা

নারীরা ছোটবেলা থেকেই নানাবিধ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়।অতীতকে দুর্বলতা ভাবলে চলবে না। বরং অতীতের শিক্ষাগুলোকে একজন দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সহায়ক হাতিয়ার বানান। পৃথিবীর অনেক সফল ব্যক্তিত্ব অতীতের শিক্ষা থেকেই একজন সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেছে। আর তাই অতীত অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগান।

ইতিবাচক ভাবনা

মনে রাখবেন আপনি যেভাবে আপনার মস্তিষ্ককে আদেশ করবেন, আপনার মস্তিষ্ক সেভাবেই কাজ করবে। আর তাই ইতিবাচক ভাবুন সবসময়। একটি কঠিন কাজ আপনি পারবেনই, আপনাকে দিয়ে সম্ভব এ রকম ভাবনা আপনার মনের শক্তিকে বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ আর তাই মস্তিষ্ককে সব সময় ইতিবাচক এবং সংকল্পবদ্ধভাবে ভাবার পথে পরিচালিত করুন।

নিজের ওপর আস্থা রাখুন

আপনি ও অনেক সুন্দর এবং স্বাভাবিক ভাবতে পারেন সেই বিশ্বাস রাখুন নিজের প্রতি। আর নিজের অনুভূতিগুলোর ওপর আস্থা ও রাখুন। আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে বিশ্বাস করা শিখুন। সেভাবেই কাজ করুন। সফলতা আসবেই।

নিয়ম ভাঙার ভয়

আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের সব সময় নিয়মের মধ্যে থাকার শিক্ষা দেয়া হয়ে থাকে। তাদের বলা হয় নিয়ম না ভাঙতে, যে কোনো কাজই সীমারেখার মধ্যে করতে। কিন্ত কেন? কেন একজন জোরে কথা বলতে পারবে না, রাগান্বিত হতে পারবে না? কেন তাকে সব কাজ নিয়মেই করতে হবে? নিয়মগুলো যদি অনিয়ম হয়ে মাথার উপর বসে ভেঙে ফেলুন সেই নিয়ম।

সুযোগের সদ্ব্যবহার

আপনি যদি আপনার নতুন ভাবনাগুলোকে নিয়ে কাজ না করেন সেই স্বপ্নের জায়গায় সফল হবেন কীভাবে? নিজেকে খাঁচায় বন্দি না রেখে বের হয়ে পড়ুন স্বপ্ন সফল করার পথে। বড় স্বপ্ন দেখতে ভয় পেলে, বড় সফলতা কীভাবে পাবেন। আর তাই যে কোনো সুযোগের সদ্ব্যবহার করুন। ভয় পেয়ে,আড়ালে থেকে স্বপ্নগুলোকে মেরে ফেলবেন না।

একজন নারী চাইলেই চার দেয়াল ভেঙে সামনে এসে নিজেকে প্রমাণ করতে পারে। আর এই দক্ষতাগুলো নিজের আয়ত্তে আনা যায় আপনি নারী তাতে আপনি পিছিয়ে যাবেন না বরং আরো বেশি সমৃদ্ধ হবেন।