কুষ্টিয়ায় যুবক মিলনের ১০ টুকরো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুইজনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শুনানি শেষে সদর আমলি আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তারা হলেন- হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়া বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা কুষ্টিয়া শহরের হরিবাসর এলাকার মৃত মিলন শেখের ছেলে সজীব শেখ (২৪) ও হাউজিং সি ব্লকের বাসিন্দা আওলাদ খানের ছেলে ইফতি খান (১৯)। রিমান্ড মঞ্জুর শেষে আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
এর আগে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় হত্যায় জড়িত ৬ আসামিকে একযোগে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অথবা ৭দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
এরমধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেওয়া সজীব ও ইফতির রিমান্ড শুনানির দিন মঙ্গলবার ধার্য করা হয়।
সদর আদালতের জিআরও এসআই ইস্কান্দার রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সজিব ও ইফতি ব্যতীত বাকি চারজন আদালতে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া চারজন হলেন, কুষ্টিয়া শহরের বড়বাজার দেশওয়ালী পাড়ার বাসিন্দা কাজী ফরহাদ হোসেনের ছেলে কাজী লিংকন হোসেন (২৩), সদর উপজেলার বোয়ালদাহ গ্রামের বাসিন্দা রফিক প্রামানিকের ছেলে জনি আহমেদ (১৯), কুমারগাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে ফয়সাল আহমেদ (২৫) এবং হাউজিং ডি ব্লকের বাসিন্দা সাইদুল ইসলামের ছেলে সজল ইসলাম (১৯)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) সাজু মোহন সাহা বলেন, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ছয়জনকে আদালতে হাজির করা হলে চারজন বিচারকের কাছে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তবে ঐ সময় জবানবন্দি দিতে রাজি হননি হত্যায় নেতৃত্ব দেওয়া সজীব ও ইফতি। এরপর বিচারকের কাছে তাদের দুইজনের ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে অন্য কোনো ঘটনার সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত ৩১ জানুয়ারি কুষ্টিয়া শহরের ভাড়া বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন যুবক মিলন হোসেন (২৭)। এ ঘটনায় নিখোঁজের দিন রাতে স্ত্রী মিমি খাতুন কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরই প্রেক্ষিতে আটককৃত পাঁচজনের স্বীকারোক্তিতে ৩ ফেব্রুয়ারি পদ্মার চর থেকে মিলনের ১০ টুকরো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা করেন নিহতের মা শেফালি খাতুন।
পুলিশ জানায়, চাঁদার দাবিতে মিলনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর গুম করার সুবিধার্থে লাশ ১০ টুকরা করে পদ্মা নদীর চরে পুঁতে রাখা হয়। আর এই পুরো হত্যাকান্ডের নেতৃত্ব দেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি সজীব শেখ ওরফে এস কে সজীব। তবে হত্যায় জড়িতরা সবাই একে অপরের পরিচিত। এছাড়া সজিবের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে।
নিহত মিলন হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের বাহিরমাদি পূর্বপাড়ার মওলা বক্সের ছেলে। তিনি পড়াশুনার পাশাপাশি আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতেন। ৮ মাস আগে বিয়ে করার পর স্ত্রীকে নিয়ে শহরের হাউজিং ই ব্লক এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকতেন।