পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ নানা ধরনের কাজকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়ে থাকেন। তেমনই এক বিচিত্র পেশা বাঁশ, গাছ ও ঝোপঝাড় থেকে পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করা। এই ডিমের চাহিদাও রয়েছে অনেক। ডিম বিক্রি করতে বসে হাটও। এই হাটে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
শেরপুরের গারো পাহাড়ের প্রত্যন্ত গ্রামের একদল মানুষ পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তারা স্থানীয় হাটে ডিম বিক্রি করে সংসার চালান। এছাড়া হাটে ডিম বিক্রি করতে আসেন জেলার সীমান্তবর্তী তিন উপজেলাসহ ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট এবং জামালপুর জেলার বক্সীগঞ্জের গারো পাহাড়ের লোকজনও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কর্মহীন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও শতাধিক বাঙালি পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে নিজেদের সংসার চালাচ্ছেন। সারা বছর পাওয়া যায় না পিঁপড়ার এই ডিম। বর্ষার সময় মূলত এক শ্রেণির লাল বড় পিঁপড়া বনাঞ্চলের শাল-গজারি গাছের মগ ডালে, পাতা ও গাছের খোড়লের (গর্ত) মধ্যে বাসা তৈরী করে ডিম পাড়ে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাহাড়ি শাল-গজারি বনে এবং আম, জাম, লিচুগাছসহ বিভিন্ন গাছ থেকে বাঁশের আগায় নেট বা জাল দিয়ে এক ধরনের ঠোঙা তৈরী করে চলে ডিম সংগ্রহ। সারা দিন ঘুরে ৩০০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ এক কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে পারেন কেউ কেউ। পিঁপড়ার এই ডিম বড়শিতে সৌখিন মৎস্য শিকারিরা মাছ শিকারের জন্য ব্যবহার করেন।
শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার প্রত্যন্ত রাংটিয়া এবং বাঁকাকড়া গ্রামে বসে পিঁপড়ার ডিমের হাট। হাটে বিকেলের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিম সংগ্রকারীরা এসে জড়ো হন। পাইকাররা হাটগুলো থেকে এক হাজার টাকা কেজিতে ডিম কিনে নেন বিক্রেতাদের কাছ থেকে। পরবর্তীতে তারা সেই ডিম শেরপুরসহ ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন।
সেতু কোচ নামের এক পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহকারী বলেন, আমরা বেকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও কিছু বাঙালি ভালো কাজের ব্যবস্থা করতে না পেরে ঝুঁকিপূর্ণ এই পেশা বেছে নিয়েছি। ডিম সংগ্রহ করতে গিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। এছাড়া হাতি, সাপ ও মৌমাছির আক্রমণের ঝুঁকিতো থাকেই।
ব্যবসায়ী অবিনাশ কোচ বলেন, অনেক দরিদ্র এবং ঋণগ্রস্থ মানুষ রয়েছেন যারা পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহের পেশায় জড়িত।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com