লঞ্চে ভয়াবহ আগুন: বরিশাল মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন সবাই শঙ্কামুক্ত

:
: ৩ years ago

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চে দগ্ধ হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৭ জনের প্রত্যেকেই শঙ্কামুক্ত।

রোববার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন এই হাসপাতালে নিয়োজিত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসরুর উর রহমান।

তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়ে যাওয়া ৩৫ জনসহ মোট ৩৭ রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুজন অর্থোপেডিকস বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। প্রত্যেকেই শঙ্কামুক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ এক রোগীর শরীরের ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনজন আইসিইউতে রয়েছেন।

‘ফলোআপে গিয়ে রোববার প্রত্যেকের উন্নতির বিষয়টি আমরা লক্ষ করেছি। তিন থেকে চারজনের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে বলে ধারণা করছিলাম; তবে তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, সেই ধরনের সমস্যা হয়নি। আমরা চারজনের অপারেশন করেছি।’

চিকিৎসকের টাকায় রোগীদের ইনজেকশন

ঝালকাঠিতে লঞ্চে দগ্ধ যেসব রোগী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদের সব ধরনের খরচ বহন করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেক ক্ষেত্রে বাইরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হলে তাদের খরচও বহন করছেন চিকিৎসকরা।

রোববার হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে চিকিৎসাধীন দগ্ধ কয়েকজন ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

নাসিমা নামে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগী বলেন, ‘সবকিছু হাসপাতালের মধ্যেই হচ্ছে। আমাদের কোনো ওষুধ কিনতে হচ্ছে না। ওষুধ চাইতেও হচ্ছে না। নার্সরা এসে দেখে ওষুধ দিয়ে যাচ্ছেন।’

চিকিৎসাধীন মহিউদ্দিনের স্বজন সাইফুল বলেন, ‘বরগুনা সদরে থাকি আমরা। অত টাকা-পয়সা নেই। ডাক্তার একটা ইনজেকশন দিয়েছিলেন, এটা হাসপাতালে ছিল না। এক ডাক্তার নিজের পকেট দিয়া ৫০০ টাহা দিয়ে ইনজেকশন কিনে দিয়েছেন।’

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো রোগী যেন প্রলোভনে পড়ে হাসপাতালের বাইরে না যান, সে ব্যাপারে সতর্ক করেছে। এ ছাড়া ওষুধ কিনতেও বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের কর্মী আহম্মেদ বায়জীদ বলেন, ‘রোববার সকাল থেকে দগ্ধ ৩০ রোগীর স্যাম্পল নিয়েছি আমরা। সবকিছুই করা হচ্ছে হাসপাতালে। পরিচালক স্যার আমাদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।’

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মাসরুর উর রহমান বলেন, ‘এখানে চিকিৎসা নিতে কোনো রোগীকেই অর্থ খরচ করতে হচ্ছে না। ঢাকা থেকে আসা সাত চিকিৎসককে চিকিৎসার জন্য ওষুধ থেকে শুরু করে সব সুবিধা দেয়া হচ্ছে।’

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসায় যাতে কোনো ধরনের ত্রুটি না হয়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ ছাড়া বন্ধ থাকা বার্ন ইউনিটে ২০ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঢাকা থেকে চিকিৎসক আসার কারণে। রোগীদের কোনো খরচই হচ্ছে না হাসপাতালে। সবটার দায়ভার আমাদের। আমাদের পকেট থেকে টাকা দেওয়ার প্রয়োজন হলে সেটিও করব।’