ঘাট থেকে প্রতিটি লঞ্চে কত যাত্রী ওঠেন, জানে না খোদ তদারকি সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। দেওয়া হয় অনুমাননির্ভর ভয়েজ ডিক্লেয়ারেশন। আধুনিক টিকিটিং সিস্টেমসহ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ প্রশাসনের।
লঞ্চের প্রথম তলার খোলা জায়গাকে ডেক বলা হয়। লোহার প্লেটের ওপর এখানে চাদর বিছিয়ে যাত্রা করেন যাত্রীরা। এখানকার যাত্রীদের কারোরই নেই অগ্রিম টিকিট। লঞ্চে ওঠার আগে নয়, মাঝরাত কিংবা গন্তব্যে পৌঁছে, লঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার সময় টিকিট কাটেন তারা। যুগ যুগ ধরে চলছে এ ব্যবস্থা।
যাত্রী জানান, যে কোনো সময়ই টিকিট কাটা যায়। তারা যদি চাপ প্রয়োগ করে, তবে আগে টিকিট কাটবে। কিন্তু টিকিটের জন্য তো সে রকম চাপ প্রয়োগ করা হয় না।
লঞ্চের কেবিন, সোফার জন্য অগ্রীম টিকিট কিনতে হলেও সেগুলোর প্রায় প্রতি সিটে একের অধিক যাত্রী চলাচল করেন। লঞ্চ কর্তৃপক্ষও স্বীকার করেন, কেবিন ও সোফার যাত্রী তালিকা কিছুটা থাকলেও লঞ্চঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় ডেকের পরিসংখ্যান থাকে না।
সুপারভাইজাররা বলেন, ডেকে কে কোন সময় আসে, তার কোনো ঠিক নেই। তাই লঞ্চ ছাড়ার পর টিকিট কাটা হয়। টিকিট কাটার জন্য আমরা ডেকে যাই। ধীরে ধীরে টিকিট কাটি। সেখানে কোনো তাড়াহুড়া নেই।
অথচ নিয়মানুযায়ী লঞ্চ ছাড়ার আগে, কত যাত্রী উঠল, তা ধারণক্ষমতা অনুযায়ী আছে কি না, বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে তা ভয়েজ ডিক্লেয়ারেশন নিতে হয়। লঞ্চ কর্তৃপক্ষও ভয়েজ ডিক্লেয়ারেশন নেয়। কিন্তু ডেকের যাত্রী হিসাব না থাকায় গোটা বিষয়টিই হয় অনুমাননির্ভর। বিআইডব্লিউটিএ একে শুভঙ্করের ফাঁকি বলছে।
বিআইডব্লিউটির বরিশালের যুগ্ম পরিচালক মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, লঞ্চে কী পরিমাণ যাত্রী আছে, সেটার একটা ভয়েজ ডিক্লেয়ারেশন করা হয়। তবে এটার সঙ্গে কিছুটা অসংগতি লক্ষ্য করা যায়। আমরা এ বিষয়ে তাদের সাবধান করেছি যে ভয়েজ ডিক্লেয়ারেশন যথাযথ করেই আমাদেরকে সাবমিট করতে হবে।
স্থানীয় প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা সভাতেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জেলা প্রশাসকও মনে করেন, লঞ্চের টিকেটিং সিস্টেমটি আধুনিক করা দরকার।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, আমরা সব কিছুরই আধুনিকায়ন করছি। কিন্তু টিকিটিং সিস্টেমটা এখনও পুরনো আমলের রয়ে গেছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই তাদের টিকিটিং সিস্টেমের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।
দেশের সর্ববৃহৎ যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো চলাচল করে ঢাকা বরিশাল রুটে। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি বিলাসবহুল লঞ্চে অর্ধলক্ষ মানুষ যাতায়াত করে। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে লঞ্চ চললেও কোথাও আধুনিক টিকিটিং সিস্টেম নেই।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com