র্যাবের গুলিতে পা হারানোর দূর্ঘটনা বদলে দিয়েছে ঝালকাঠির লিমন হোসেনের স্বপ্ন। স্বপ্ন দেখেছিলেন ব্যাংকার হবেন,মা হেনোয়ারা বেগমকে আর্থিক অনটন থেকে মুক্ত করবেন।
পঙ্গুত্ব বরন করেছেন কিন্তু আত্মবিশ্বাস হারাননি। র্যাবের গুলিতে পা হারিয়ে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা লিমনকে আইনজীবী হতে উৎসাহিত করেছে। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে লিমনের। লিমন ১লা এপ্রিল থেকে একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে যোগদান করছেন। এতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র লিমনকে সহযোগিতা করছে।
মুঠোফোনে লিমন হোসেন বলেন, ‘আমার এই স্বপ্ন পূরণে সর্বদা সহযোগিতা করেছে সাভার গণ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিনাখরচে আমাকে লেখাপড়া করতে সহযোগিতা করেছেন। আমি একজন ভালো আইনজীবী হয়ে আমার মত অসহায় মানুষকে ন্যায় বিচার পেতে সহযোগিতা করতে চাই।
লিমন বলেন, আমি আরো ধন্যবাদ দিতে চাই আমি যে কোম্পানিতে দিনে ৩ ঘন্টা কাজ করতাম সেই কর্তৃপক্ষকে। আমি পঙ্গু হওয়া সত্যেও তারা আমাকে প্রতিদিন ১০০টাকা দিত। যা আমার পড়ালেখা চালিয়ে যেতে অনেক সাহায্য করেছে।
লিমন আরো বলেন, আমাকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে আমার আইনজীবী আক্কাস সিকদার বড় ভূমিকা পালন করেছেন। আমিও আইনজীবী হয়ে তাঁকে সহযোগিতা করতে চাই এবং আমি বিশ্বাস করি যারা আমার পায়ে গুলি করেছে তাদের একদিন নিশ্চয়ই শাস্তি হবে।’
লিমনের আইনজীবী আককাস সিকদার বলেন, ‘লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম র্যা বের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে ছেলেকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যে মামলা করেছিলেন তা বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।আগামী ১লা এপ্রিল সেই মামলার শুনানীর দিন ধার্য রয়েছে। লিমন নিশ্চয়ই ন্যায় বিচার পাবে।’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বাড়ির পাশে মাঠে গরু আনতে গিয়ে র্যাবের গুলিতে গুরুতর আহত হয় লিমন হোসেন। তখন লিমন এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। র্যাব ওই দিন দূর্ধর্ষ এক সন্ত্রাসীকে ধরতে জেলার রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে যায়। সেখানে ভুলক্রমে লিমনকে গুলি করে র্যা ব। এরপর আহত লিমনের বিরুদ্ধে ঝালকাঠির রাজাপুর থানায় র্যাব বাদী হয়ে দু’টি মামলা করে। ২০১৩ সালের ১১ জুলাই সরকারের এক আদেশে লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দু’টি মামলাই প্রত্যাহার করে নেয় র্যাব।