মেদিনীপুরের জঙ্গলে পালিয়ে বেড়ানো রয়েল বেঙ্গল টাইগারটি আর বাঁচতে পারেনি। শুক্রবার জঙ্গলে মিলেছে এর মৃতদেহ। বন দপ্তর বলছে, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর চোরা শিকারিদের হাতে প্রাণ গেছে এই রয়েল বেঙ্গলের।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড় জঙ্গলে হঠাৎ করে গত ২ মার্চ একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব টের পায় এলাকাবাসী। স্বভাবত ওই জঙ্গলে রয়েল বেঙ্গল থাকার কথা নয়। হয়তো অন্য কোনো জঙ্গল থেকে এখানে পালিয়ে এসেছে। বাঘের অস্তিত্ব মেলার পর ওই এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জঙ্গলে জীবিকা নির্বাহকারী ব্যক্তিরাও যাতায়াত বন্ধ করে দেয়।
বন দপ্তরের ট্র্যাপ ক্যামেরায়ও ধরা পড়ে বাঘের অস্তিত্ব। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বাঘ ধরার অভিযান শুরু হয়। ৩১ মার্চ শিকারিদের তাড়া খেয়ে একবার একটি গর্তেও পড়ে যায় বাঘটি। কিন্তু বনদপ্তরের কর্মীরা বশে আনতে পারেনি। বন্য শূকরের ফাঁদও পাতা হয়। এতেও লাভ হয়নি। জাল ছিঁড়ে বাঘ পালিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে বাঘঘোড়া জঙ্গলে মেলে ওই বাঘটির মৃতদেহ। বাঘের মুখে বল্লম বিঁধে ছিল। শরীরের বিভিন্ন স্থানেও আঘাতের চিহ্ন।
জানা যায়, লালগড় জঙ্গলের পার্শ্ববর্তী ধরমপুর জঙ্গলে শুক্রবার সকালে শিকার উৎসবে গিয়েছিল আদিবাসীরা। প্রথমে ওখানেই দুই আদিবাসী বাঘের আক্রমণে আহত হন। এরপরেই মেলে বাঘের মৃতদেহ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য বন কর্মকর্তা রবিকান্ত সিনহা বলেন, ‘আমরা বাঘটিকে জীবিত ধরতে ব্যর্থ হয়েছি। শেষ পর্যন্ত আদিবাসীদের হাতে বেঘোরে প্রাণ গেল রয়েল বেঙ্গল টাইগারটির।’
বাঘ মরার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গেসঙ্গে গ্রামবাসীরা জঙ্গলে ছুটে আসে। মৃত বাঘের সঙ্গে সেলফি তোলার ধুম পড়তেও দেখা যায়। কেউ বাঘটিকে হাত দিয়ে স্পর্শ করে। কেউ আবার দুহাত তুলে নমস্কার জানায়। কেউ আবার বাঘের লোম নেওয়ার চেষ্টা করে। গ্রামবাসীদের দাবির মুখে শেষ পর্যন্ত বাঘটিকে সাধারণ মানুষকে দেখানোর জন্য রাখা হয় বাঘঘোড়া স্কুলের মাঠে। বনদপ্তর বলছে, বাঘটির ময়নাতদন্ত হচ্ছে মেদিনীপুরে। এরপরই সমাহিত করা হবে।