রোহিঙ্গাদের বাড়িতে আগুন দেয়ার স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। রাখাইনে জাতিগত নিধনের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বাড়িতে আগুন দেয়ার স্যাটেলাইট ‍ছবিও প্রকাশ করেছে এই সংস্থা।

বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়: ‘স্যাটেলাইট থেকে তোলা রাখাইন রাজ্যের অনেক ছবি বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি জানায়, সেখানে গত তিন সপ্তাহে ৮০টির বেশি স্থানে বিশাল এলাকা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের সহযোগী স্থানীয় গোষ্ঠীগুলো এই কাজ করছে। ’

স্যাটেলাইটে তোলা ছবি, স্যাটেলাইটে আগুন শনাক্ত করতে পারে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া ছবি ও মানুষের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি এই দাবি করে।

সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এমন সংঘবদ্ধ দলগুলো একসাথে মিলে এই জ্বালাও পোড়াও চালাচ্ছে। তারা গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে এবং পলায়নরত মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে।

অ্যামনেস্টির একজন কর্মকর্তা তারানা হাসান বলছেন, এটা পরিষ্কার যে- সুপরিকল্পিতভাবে এসব সহিংসতা চালানো হচ্ছে। কেননা যেসব জায়গায় আগুন দেয়া হয়েছে সেই জায়গাগুলোর আগের চার বছরের স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে তারা কোন অগ্নিসংযোগের ঘটনা দেখতে পাননি। বেছে বেছে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতেই আগুন দেয়া হয়েছে।

যেসব গ্রামে রোহিঙ্গা এবং রাখাইনরা পাশাপাশি বাস করে, সেখানে রাখাইন বাড়িগুলো আগুনের হাত থেকে বেঁচে গেছে বলে অ্যামনেস্টি এই রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।

গত ২৪ অাগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর থেকে সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল চলছে।

এর পর থেকে গত তিন সপ্তাহে মোট ১০৬ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে এসেছেন, যাদের অনেকেই এসেছেন গুলি ও পোড়া ক্ষত নিয়ে।

এদের মধ্যে দুইজন গত ২৬ অগাস্ট ও ৩০ অাগস্ট মারা যান। ২৩ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।