পেনাল্টির সিদ্ধান্তটা ইংলিশ রেফারি মাইকেল অলিভারের। ইতালিতে তাঁর মুণ্ডুপাত তো চলছেই পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপমানের চূড়ান্ত হচ্ছেন তাঁর স্ত্রী! মৃত্যুভীতিও দেখানো হচ্ছে!
রিয়াল মাদ্রিদ-জুভেন্টাস কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগের ৯৩ মিনিটে সেই পেনাল্টি নিয়ে বিতর্ক চলছেই। সিদ্ধান্তটা ঠিক না ভুল, তা নিয়ে ফুটবলবিশ্ব বিভক্ত। প্রথম লেগে ৩ গোলে পিছিয়ে থাকার ব্যবধান ফিরতি লেগে ঘুচিয়ে সমতায় ফিরেছিল ‘জুভ’রা। কিন্তু যোগ করা সময়ে জুভেন্টাসের বক্সের মধ্যে মেধি বেনাশিয়া রিয়ালের লুকাস ভাসকুয়েজকে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি অলিভার। স্পটকিক থেকে গোল করে রিয়ালকে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে তোলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
এই ম্যাচের পর থেকেই অলিভার যেন ইতালির ‘জাতীয় শত্রু’। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁর স্ত্রী লুসি অলিভারের অতীত কর্মকাণ্ড খুঁজে কিছু বিতর্ক চাউর করার চেষ্টাও করছে। লুসি নিজেও ফুটবল রেফারি। ২০১৬ সালে মাদ্রিদ ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গিয়ে ছবিও তুলেছিলেন লুসি। ইতালিয়ান সংবাদমাধ্যম অলিভার সেসব ছবি টুইটার থেকে নিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, রিয়ালের প্রতি তাঁদের আলাদা একটা টান আছে!
এখানেই শেষ নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লুসি অলিভারের ওপর হামলে পড়েছে ইতালিয়ান তথা জুভেন্টাস সমর্থকেরা। তাঁকে নানাভাবে অপমান করা হচ্ছে। পাশাপাশি হুমকি-ধমকি তো থাকছেই। একজন লিখেছেন, ‘ইতালি বিরোধী দম্পতি। ভুলেও ইতালিতে এসো না। স্পেন ও মাদ্রিদকে উপভোগ করো। অপরাধী।’
আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারীর মন্তব্য, ‘তোমাদের দুজনকেই এর খেসারত দিতে হবে। তোমার গর্দভ স্বামীকে আমি এমন শিক্ষা দেব যা সে জীবনে কখনো ভুলবে না (যদি বেঁচে থাকে)।’
অলিভার দম্পতির প্রতি ইতালিয়ান সমর্থকদের এমন রোষানলের পেছনে জুভেন্টাস গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফনকে দোষারোপ করছেন বিবিসির ক্রীড়া উপস্থাপিকা ও ধারাভাষ্যকার জ্যাকুই ওটলে। তাঁর টুইট, ‘জিয়ানলুইজি বুফন-অলিভারের ঘটনা থেকে সবাই যখন মনোযোগ সরিয়ে নিলেও অলিভারের স্ত্রী এখনো বুফনের কাণ্ডজ্ঞানহীন মন্তব্যের খেসারত দিচ্ছেন। তাঁকে কটুবাক্য বর্ষণ চলছেই। ম্যাচ শেষে করা মন্তব্যের জন্য বুফনের ক্ষমা চাওয়ার এটাই সময়। এটা (লুসির প্রতি কটুবাক্য) থামতেই হবে।’
ফিরতি লেগের সেই ম্যাচে বুফন পেনাল্টির প্রতিবাদ করায় তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি অলিভার। ম্যাচ শেষে রেফারিকে উদ্দেশ করে বুফন বলেছিলেন, ‘সে মানুষ নয়, পশু।’ এ ছাড়া অলিভারের হৃদয়কে ‘আবর্জনার ভাগাড়’ বলেন বুফন। ম্যাচটা পরিচালনার বদলে স্ত্রীকে নিয়ে গ্যালারিতে বসে দেখলে ভালো করতেন বলে মন্তব্য করেন। এ কারণে সমর্থকেরা তাঁর স্ত্রীকে খুঁজে বের করে লক্ষ্য বানিয়েছে কি না, তা পরিষ্কার নয়। তবে যা করা হচ্ছে তা অগ্রহণযোগ্য, এটা মানছেন সবাই।