চলতি মাসে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন নতুন রেকর্ড হয়েছে। তারপরও লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে প্রশ্ন জাগছে।
চলমান তীব্র তাপপ্রবাহকে লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসাইন। এবার তাপপ্রবাহ প্রায় ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদাও অনেক বেড়েছে। এ কারণে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও দেশে লোডশেডিং হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, আগামী মে মাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ধরে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। টানা প্রচণ্ড গরমের কারণে এপ্রিলেই চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে।
মোহম্মদ হোসাইন বলেন, এ বছর গ্রীষ্ম, সেচ মৌসুম ও রমজান একসঙ্গে হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে, সেটা আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। এটা বিবেচনা করে আমাদের উৎপাদন পরিকল্পনা সাজিয়েছিলাম। আমরা এর স্বাক্ষরও রেখেছি। গত রাতে আমরা ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৬০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। এর আগে আমরা ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
তিনি বলেন, রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন সত্বেও গত প্রায় ৫০ বছরের রেকর্ড ব্রেক করে যে তাপপ্রবাহ চলছে, তাতে বিদ্যুতের চাহিদা ধারণার চেয়েও বেশি হয়ে গেছে। ফলে, আমাদের অনিচ্ছা সত্বেও লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে গ্রাহকদের কষ্ট হচ্ছে। সেজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে, আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আশা করি, শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
মোহম্মদ হোসাইন আরও বলেন, বিশেষ করে, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তিবাসীর প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ধৈর্য ধারণার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আশা করি, শিগগিরই আমরা এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে পারব। আপনাদের সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান মোহম্মদ হোসাইন। তিনি বলেন, এতে চাহিদা কমবে। ফলে, লোডশেডিং করার প্রয়োজনীয়তা কমবে। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হলে যেমন আপনার বিদ্যুৎ বিল কমবে, পাশাপাশি এতে দেশেরও লাভ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে প্রথমবারের মতো ১৫ হাজার মেগাওয়াটের মাইলফলক পেরিয়েছে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন। এদিন মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৫ হাজার ৩০৪ মেগাওয়াট। এর আগে দেশের সর্বোচ্চ উৎপাদন হয় ১২ এপ্রিল (বুধবার) রাতে ১৪ হাজার ৯৩২ মেগাওয়াট।