১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ দেখেছেন এবং এখনও বেঁচে আছেন এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। ফুটবল ইতিহাসে বিভিন্ন কারণে কুখ্যাত হয়ে আছে সেই বিশ্বকাপ। সেবার প্রতিপক্ষের ফাউলের শিকার হয়ে প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নেয় ব্রাজিল। সেই বিশ্বকাপে পেলে এতো বেশি ফাউলের শিকার হন যে ইনজুরির কারণে অবসরের ঘোষণা দিয়ে বসেন তিনি। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পেলেকে ১০ বার বাজে ট্যাকল করে পতুর্গীজ ডিফেন্ডাররা। ৫২ বছর পর আবার আলোচনায় ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ। এবার প্রথম ম্যাচে নেইমারকে টার্গেট বানান সুইজারল্যান্ডের ফুটবলাররা। পুরো ম্যাচে ১০ বার ফাউলের শিকার হয়েছেন এই ব্রাজিলতারকা। গত ২০ বছরে এক ম্যাচে এতো বেশি ফাউলের শিকার হননি আর কোনো ফুটবলার।
১৯৫৮ ও ৬২ আগের দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন ছিল ব্রাজিল। ১৯৬৬ সালে সেলেসাওদের দলটিকে ইতিহাসের সেরা মনে করা হতো। পেলে, গ্যারিঞ্চা, গিলমার, সান্তোস, জোয়ারজিনহো, টোস্টাও, গারসেনসহ একঝাক তারকা। তারপরও সেবার প্রথম রাউন্ডে বিদায় নেয় ব্রাজিল। সেটা যতোটা না খেলার কারণে তার চেয়ে বেশি প্রতিপক্ষের কড়া ও বাজে ট্যাকেলের কারণে।
সেবার প্রথম ম্যাচে বুলগেরিয়ার বিরুদ্ধে গোল করেন পেলে। তবে প্রতিপক্ষের বর্বরোচিত ফাউলের শিকার হয়ে ইনজুরিতে পড়েন তিনি। ব্রাজিল সেই ম্যাচে জিতলেও হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ম্যাচে খেলতে পারেননি পেলে। সেই ম্যাচে হেরে যায় তার দল। পতুর্গালের বিপক্ষে টিকে থাকার ম্যাচে ঝুঁকি নিয়ে পেলেকে মাঠে নামান কোচ ভিসেন্তে ফিওলা। ওই ম্যাচে পেলেকে এত বেশি ফাউল করা হয় যে, তিনি মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই সাথে ম্যাচের পর তিনি অবসরের ঘোষণাও দেন। পরে পেলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন পর্তুগালের ফুটবলাররা।
এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে যেন একই ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে সুইজারল্যান্ডেন ফুটবলারর! নেইমারকে ঠেকাতে তাকে একের পর এক আঘাত করে যান তারা। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে আঘাত পাওয়ায় এই ম্যাচে পুরো ফিট ছিলেন না নেইমার। উপরন্তু তাকে একের পর এক আঘাত করে আরো বেশি খোলসবন্দি করে রাখে সুইস ডিফেন্ডাররা।
পুরো ম্যাচে ১০ বার ফাউলের শিকার হন নেইমার। সুইস খেলোয়াড়েরা যেন নেইমারকে লক্ষ্য বানিয়েই মাঠে নেমেছিলেন। ব্রাজিল তারকার কাছে আসা কোনো বলই দখল করতে দেননি সুইস ডিফেন্ডার ভ্যালন বেহরামি। ৪৪টি পাসের মধ্যে ৪১ বারই বলের দখল নিতে পারেননি নেইমার।
কেবল ফাউলের শিকার ব্রাজিলিয়ানদের কথা হিসাবে নিলে ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর এত বেশি ফাউলের শিকার হননি কোনো ব্রাজিলীয় ফুটবলার। নেইমারকে সুইস খেলোয়াড়েরা যেভাবে ফাউলে ফাউলে জর্জরিত করেন, সেটি রেকর্ডই।
১৯৯৮ সালে ইংল্যান্ডের অ্যালান শিয়ারারকে একই ম্যাচে ১১ বার ফাউল করে তিউনিসিয়া। এরপর এক ম্যাচে এতবার ফাউলের শিকার হননি আর কেউই। ১৯৬৬ সালের পর ব্রাজিলিয়ান হিসেবে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হলেন নেইমার।
১-১ গোলে ড্র হয়েছে ম্যাচটি।