‘ভুল করাটাই মানুষের স্বভাব’- এটা শুধু প্রবচনই নয়, বাস্তবতাও। রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ ভুল করতেই পারে। খেলার মাঠে যেমন ফুটবলার-ক্রিকেটাররা অহরহ ভুল করেন, তেমনি রেফারি ও আম্পায়ারেরও ভুল হতেই পারে। হয়ও।
বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো মর্তের সর্ববৃহৎ যজ্ঞে রেফারিরও চোখ এড়িয়ে ফুটবল জাদুকর দিয়েগো ম্যারাডোনার হাত দিয়ে গোল করার রেকর্ড আছে। ক্রিকেটে লেগবিফোর উইকেট, কট বিহাইন্ড, স্ট্যাম্পিং, রান আউট আর ব্যাট-প্যাড ক্যাচ নিয়ে কত ভুল সিদ্ধান্তই না হয়! কত শত সম্ভাবনাময় ইনিংস আম্পায়ারের ক্ষণিকের ভুলে অকালে ঝরে পড়েছে। আবার অনেক সময় আউট হয়েও আম্পায়ারের ভুলে অনেক ব্যাটসম্যান নতুন জীবনও পেয়েছেন।
সেসব ভুল এড়াতেই আজকাল ক্রিকেটে রেফারেল সিস্টেম চালু হয়েছে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার একটা প্রথা চালু হয়েছে। একই ধারা অনুসরণ করা হয়েছে হকিতেও। আম্পায়ারের যেকোনো সিদ্ধান্ত এমনকি পেনাল্টি কর্নার ও পেনাল্টি স্ট্রোকের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত পুনঃবিবেচনা করার নিয়ম চালু হচ্ছে।
কিন্তু তাই বলে আম্পায়ার ‘নো আর ওয়াইড বল’ ছাড়া ছয় বলের পরিবর্তে সাত বলে ওভার গুনবেন, তা কী করে হয়? ক্রিকেটে এমন ঘটনা যে ঘটেনি, বা ঘটে না- তা নয়। ঘটে। এসব ক্ষেত্রে আম্পায়ার লেগ আম্পায়ার কিংবা থার্ড আম্পায়ারের সাথে কথা বলে মিলিয়ে নেন। তাও কোনোরকম সংশয়-সন্দেহ থাকলে ওয়াকি-টকিতে স্কোরারের সঙ্গেও কথা বলে ঠিক করে নেন।
কিন্তু আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান লিটু কি না করেছেন উল্টোটা। কারো সঙ্গেই আলাপ করেননি। সন্দেহ নিরসন করেননি। তিনি নিজের ভুল শোধরাতে টিভি আম্পায়ার গাজী সোহেল বা স্কোরারদের সাথেও কথা বলতে পারতেন।
এসব নিয়েই এখন উঠছে নানা প্রশ্ন। সিলেট ম্যানেজমেন্ট ও সমর্থকরা যারপরনাই হতাশ এবং খানিকটা ক্ষুব্ধ। যে বোলারের ওভারে সাত বল করার দুর্লভ প্রায় রেকর্ড হলো, সেই সিলেট সিক্সার্স পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিও বিস্মিত এবং হতাশ।
তার একটাই কথা, আম্পায়ার মানুষ। তারও ভুল হতে পাওে; কিন্তু আমি যখন ওভার শেষ করে আমার নির্ধারিত ফিল্ডিং পজিশন ফাইন লেগে চলে যাচ্ছিলাম, তখন আম্পায়ার লিটু ভাই (মাহফুজুর রহমান) আমাকে ডেকে বললেন, না না আরও এক বল আছে। আমার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই গুনে বল করার অভ্যাস আছে। আজও বল গুনেই শেষ করেছি। ছয় বল হবার পরই বোলিং মার্কে না গিয়ে ফিল্ডিং পজিশনে যেতে উদ্যত হই, আর তখনই আম্পায়ার বললেন- ছয় নম্বর ডেলিভারি বাকি আছে। আমি অধিনায়ক নাসিরকে ডেকে বললাম, দোস্ত আমাকে আরও একটি বল বেশি করার কথা বলছেন আম্পায়ার।
আমরা বোঝালাম, আপনি স্কোরার ও টিভি আম্পায়ারের সাথে কথা বলে নিন। আম্পায়ার লিটু ভাই (মাহফুজুর রহমান) তাদের সাথে কথা বলেছেন কি বলেননি, তা খেয়াল করিনি। তবে তিনি আমাকে বললেন, নাহ তোমার আরও একটি বল বাকি আছে। সেটা শেষ করো। তখন আমি আবারো বললাম, ভাই আমার তো ওভার শেষ। আপনি স্কোরারের সাথে মিলিয়ে দেখেন। কিন্তু আম্পায়ার অনঢ় তার সিদ্ধান্তে। বাধ্য হয়ে আমাকে একটি বল বেশি করতে হলো।’
আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান লিটুর হিসাব ভুলের কাহিনী এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। এরপর কামরুল ইসলাম রাব্বি তাকে বলেন, আমি যেহেতু আগের ওভারে এক বল বেশি করেছি। তাই পরের ওভারে এক বল কম করবো। তখন আম্পায়ার তাকে বলেন, না তা কী করে হয়? এক ভুল শোধরাতে কি আরেক ভুল করা যায়?’
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com