রানু মন্ডল। ৬০ বছর আগে জন্মেছিলেন কলকাতার এক অবস্থাসম্পন্ন পরিবারে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ছোট বেলাতেই মা-বাবাকে হারান। শুরু হয় দাদীকে নিয়ে তার একাকী জীবনযুদ্ধ। এই একাকিত্বই জাগিয়ে তোলে তার হৃদয়ে গানের জন্য অকৃত্রিম ভালোবাসা। চলে গানকে সঙ্গী করে টিকে থাকা।
এরপর একদিন তার বিয়ে হয় বলিউডের উজ্জ্বল তারা ফিরোজ খানের ব্যক্তিগত পাচকের সাথে। কলকাতা থেকে চলে আসেন মুম্বাইয়ে। সিনেমার পরিবেশে সিনেমার গান নিয়ে বয়ে চলে তার লাল-নীল সংসার। প্রেমে পড়ে যান নামকরা বলিউড গায়িকা লতা মঙ্গেশকারের সুরের। মজে যান তার গানে। এরপরই আবার তার জীবনে ভাগ্যের নির্মম থাবা। হারিয়ে ফেলেন প্রিয় স্বামীকে। জীবনে আবার একাকিত্ব, আবার ঝড়।
ভাগ্যের ফেরে আজ তিনি রেলস্টেশনের গায়িকা। সম্প্রতি লতা মাঙ্গেশকারের চিরসবুজ ‘এক পেয়ার কা নাগমা হে’ গান গাওয়ারত তার একটি ভিডিও ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। জীবন যেন পালটে যেতে শুরু করে আরেকবার রেললাইনের মত। বলিউডের নামকরা মিউজিক ডিরেক্টর হিমেশ রেশমিয়া তাকে নিয়ে আসেন জনপ্রিয় টিভি রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’ তে।
রানু মন্ডল সাম্প্রতিক সময়ে এক আলোচিত নাম। বলা যায়, এই সময়ের একজন অনলাইন সেলিব্রিটি। এরই মধ্যে খ্যতির স্বাদ পেতে শুরু করেছেন। পাঁচ-ছয়টি গানে সুরও দিয়েছেন। খ্যাতি আসতে না আসতে বিতর্কও নিয়ে এসেছে সাথে করে। শোনা যাচ্ছে, দানবীর বলে খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান খান তাকে বাড়ি কিনে দিয়েছেন।
রানু অবশ্য বলছেন, সালমান খানের সাথে তার এখনও দেখা হয় নি। তবে তার ‘তেরে নাম’ খুব ভালো লেগেছে। রানু তার জীবন সম্পর্কে বলেন, পেছন ফিরে তাকালে তার নিজের জীবনকে কোনো সিনেমার গল্প থেকে কোনো অংশে কম মনে হয় না। আসলেই এত চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জীবন তো আর কোন সিনেমার গল্প থেকে কম না!