মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সবশেষ সহিংসতার পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। এদেরই একজন বেগম বাহার।
জঙ্গলের কাঁটাঝোপে ভরা রুক্ষ পথে খালি পায়ে টানা তিন দিন হাঁটার নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি।
এই তিন দিনে তার পিঠে এক ফালি কাপড়ে বাঁধা ছিল আট মাসের শিশু। ক্ষুধার জ্বালায় খেয়েছেন গাছের পাতা আর পোকামাকড়। আর পিপাসা মিটিয়েছেন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর নোনা পানি দিয়ে।
এত ভোগান্তির ও দুর্ভোগের পরও বেগম বাহার বলেন, ”রাখাইনেই আমার জন্ম, ওটাই আমার মাতৃভূমি। যাই হোক না কেন, চরম বিপদের মুখে না পড়লে কেউ তা মা’কে ছেড়ে যায় কি? কিন্তু আমাদের সামনে কোনো উপায় ছিল না। সেনাবাহিনী আমাদের গ্রামে প্রবেশ করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছিল। ”
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া আরেক নারী হামিদা খাতুন। তার কথায় উঠে এসেছে গত তিন মাসে নারীদের ওপর বর্মি সেনাদের বর্বরতার কথা। তিনি বলেন, ”প্রতি রাতে মিয়ানমারের সেনারা ঘরের দরজায় এসে কড়া নাড়তো। কারোর ঘরে সুন্দরী মেয়ে থাকলেই তাকে টেনে জঙ্গলে নিয়ে গণধর্ষণ করতো। যাদের ভাগ্য ভালো তাদের অর্ধমৃত অবস্থায় গ্রামের রাস্তায় ফেলে দিয়ে যেত। আর নয়তো গলার নলি কেটে জঙ্গলেই ফেলে রেখে দিত। ”
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া