রাজীবের দুই ছোট ভাইকে কে দেখবে?

:
: ৬ years ago

হাত হারানোর পর যদি ভাইটা অন্তত বেঁচে থাকতো তাহলে হয়তো জীবনটাকে সামনের দিকে কোনও এক উপায়ে টেনে নেওয়া যেতো! সে উপায় আর কই। হাত হারিয়েই তো শেষ নয়; জীবনটাই হারিয়ে গেছে রাজীব হোসেনের।

এই তরুণের অকাল মৃত্যুতে সবই হারা হয়েছে দুই ভাই। সামনে এখন শুধু অনিশ্চয়তা। আপন বলতে কেউ-ই যে রইল না তাদের। চোখে মুখে সে ছাপই যেন স্পষ্ট।

মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই কিশোরকে দেখেই যেন বলে দেওয়া যাচ্ছিল তাদের এই হতভাগা জীবনের গল্প। ভেতরে ভেতরে কত যে দুঃসহ যন্ত্রণা; স্পষ্টই তা ধরা পড়েছিল চোখে।

সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া রাজীবের মেজো ভাই মেহেদী হাসান বলছিল, ‘এখন তো আর ভাইয়া নেই। কী হবে জানি না। আমাদের তো আর চলার গতিও নেই।’

এসময় পাশেই তার ছোট ভাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর তামিরুল মিল্লাত দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সে। মেহেদীও একই প্রতিষ্ঠানে পড়ছে।

গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের প্রতিযোগিতার মাঝে পড়ে ডান হাতটি ছিঁড়ে যায় রাজীবের। তাৎক্ষণিকভাবে পান্থপথের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তিতুমীর কলেজের এ ছাত্রকে।

রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তার মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বাবা মারা যান। যাত্রাবাড়ীতে খালার বাসায় থেকে কম্পিউটার দোকানে কাজ করে দুই ভাইয়ের লেখা পড়া করাচ্ছিলেন তিনি।

সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজীব। তার মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোকের ছায়া নেমেছে; দেশজুড়ে নাড়া দিয়েছে এ খবর।

রাজীবের ভাই মেহেদীর আশা, হয়তো সরকার যদি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে লেখাপড়াটা চালিয়ে যেতে পারবে তারা। এখন এতটুকুই দাবি তাদের।