রাজস্ব ফাঁকি রোধে এনবিআরের ৮ দফা নির্দেশনা

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট ফাঁকির তদন্ত পরিচালনা এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে অধিকতর গতিশীল করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের ৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

রোববার এনবিআরের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এ নির্দেশনা দেন। এনবিআর সভাকক্ষে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি), শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর এবং ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালকদের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মো. নজিবুর রহমান সভাপতি হিসেবে এ নির্দেশনা দেন।

মহাপরিচালক, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) মো. বেলাল উদ্দিন, মহাপরিচালক, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর ড. মইনুল খান এবং মহাপরিচালক, ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর ড. মো. আল-আমিন প্রামানিক উপস্থিত ছিলেন।

সভায় এনবিআরের গোয়েন্দা মহাপরিচালকরা তাদের নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আওতাধীন রাজস্ব ফাঁকির তদন্ত কার্যক্রমের আলোকপাত করেন। মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা, চ্যালেঞ্জ ও অন্যান্য বিষয়াদির বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়।

পর্যালোচনা শেষে সিনিয়র সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মো. নজিবুর রহমান রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে মহাপরিচালকদের বিশেষ মনোযোগী হওয়ার গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় ৮ দফা নির্দেশনা দেন তিনি।

নির্দেশনাগুলো- অর্থপাচার রোধে সরকারের সব পক্ষের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা পূর্বক মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বৃদ্ধি করে অর্থপাচারকারীদের চিহ্নিতকরণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে দেশের স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরগুলো সূচারু নজরদারির আওতায় আনা।

দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রাণকেন্দ্র বন্দরগুলো যাতে কোনোভাবেই চোরাকারবারিদের বিচরণক্ষেত্র না হতে পারে তা নিশ্চিত করা, ভ্যাট ফাঁকি রোধ করে পণ্যের প্রকৃত উৎপাদন ও তার থেকে নির্দিষ্ট হারে ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করতে ভ্যাট গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা, আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বাবদ সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব আহরণের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত করা।

আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগসমূহ দ্রুত তদন্ত ও পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, কর ফাঁকিবাজ অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার পাশাপাশি সৎ ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং রাজস্ব ফাঁকি রোধে মাঠ পর্যায়ে যেকোনো অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি), শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর এবং ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সমন্বিতভাবে কাজ করা। প্রয়োজনে যৌথ অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ দেন তিনি।

নজিবুর রহমান বলেন, রাজস্ব আহরণে অধিকতর গতিশীলতা আনয়ন এবং করদাতাবান্ধব পরিবেশ আনতে ‘সুশাসন ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা’ কাঠামো অনুসরণ করতে হবে। এর আওতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’ নীতি অনুসরণ করছে।

তিনি বলেন, করদাতারা প্রদত্ত রাজস্বই সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রধান চালিকাশক্তি। একটি করবান্ধব, জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব তথা উন্নয়নবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও করদাতারা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। যথাযথ রাজস্ব পরিশোধ ও তা জনগণের পক্ষে সুষ্ঠুভাবে আদায় করা যথাক্রমে করদাতা প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অন্যতম দায়িত্ব।